সর্বশেষ

ইসরায়েলি হামলায় নিহত আল জাজিরা সাংবাদিকের শেষ বার্তাঃ ‘গাজাকে ভুলে যেও না’

প্রকাশিত: ১১ অগাস্ট ২০২৫, ২৩:৪০
ইসরায়েলি হামলায় নিহত আল জাজিরা সাংবাদিকের শেষ বার্তাঃ ‘গাজাকে ভুলে যেও না’

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার পাঁচ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম আনাস আল-শরীফ ছিলেন গাজার চলমান পরিস্থিতি তুলে ধরার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠগুলোর একজন। মৃত্যুর আগে তিনি বিশ্ববাসীর উদ্দেশে আবেগঘন এক শেষ বার্তা রেখে গেছেন, যা তার মৃত্যুর পর প্রকাশ করা হয়েছে।

 

মৃত্যুর পর এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত বার্তায় উল্লেখ করা হয়—“আমাদের প্রিয় আনাস তার শাহাদাতের পর এটি প্রকাশের অনুরোধ করেছিলেন।” চিঠির শুরুতে তিনি লিখেছেন, “যদি এই কথাগুলো তোমার কাছে পৌঁছে, তাহলে জেনে রেখো যে ইসরায়েল আমার কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করতে সফল হয়েছে।”

 

জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে শৈশব কাটানো আনাস জানান, তিনি সারা জীবন তার জনগণের কণ্ঠস্বর হতে চেয়েছেন এবং একদিন পরিবারের সঙ্গে দখলকৃত আসকালানে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা মেনে নিতে হবে।

 

তিনি লেখেন, জীবনে অসংখ্য যন্ত্রণা ও ক্ষতির মুখোমুখি হলেও সত্য বলার পথ থেকে কখনও সরে আসেননি। যারা ফিলিস্তিনিদের হত্যা মেনে নিয়েছে বা নীরব থেকেছে, তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর সাক্ষী থাকার আহ্বান জানান তিনি।

 

চিঠিতে তিনি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার সংগ্রাম বিশ্ববাসীর হাতে অর্পণ করেন এবং গাজার শিশুদের কথা তুলে ধরে লেখেন, “যারা স্বপ্ন দেখার সুযোগ পায়নি, নিরাপদে বাঁচতে পারেনি— তাদের মুক্তির জন্য সেতু হয়ে দাঁড়াও।”

 

আনাস তার স্ত্রী, সন্তান ও মাকে বিশ্ববাসীর জিম্মায় রেখে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। বড় মেয়ে শাম, ছেলে সালাহ, বৃদ্ধা মা এবং ধৈর্যশীল স্ত্রী উম্মে সালাহকে জীবনের সবচেয়ে বড় শক্তি বলে বর্ণনা করেন তিনি।

 

শেষে তিনি প্রার্থনা করে বলেন, “হে আল্লাহ, আমাকে শহীদদের অন্তর্ভুক্ত করো, আমার রক্তকে আমার জনগণের স্বাধীনতার আলো বানাও। গাজাকে ভুলে যেও না এবং প্রার্থনায় আমাকে স্মরণ রেখো।”

 

আল জাজিরা জানিয়েছে, আনাস আল-শরীফ ইসরায়েলি হামলার ঝুঁকি সত্ত্বেও গাজার বাস্তবতা তুলে ধরতে মাঠে কাজ করছিলেন। তার মৃত্যু গাজার সাংবাদিকতার জন্য এক বড় ক্ষতি।

সব খবর