লেখক ও শিক্ষাবিদ নাদিরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে চলমান হয়রানি ও ওএসডির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক লেখক সংগঠন পেন ইন্টারন্যাশনাল। সোমবার (১১ আগস্ট) এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তার চাকরি পুনর্বহাল এবং নারীর মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে।
নাদিরা ইয়াসমিন নরসিংদী সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। তিনি নারী অধিকার সংগঠন ‘নারী অঙ্গন’-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সাহিত্য পত্রিকা ‘হিস্যা’র সম্পাদক। দীর্ঘদিন ধরে তিনি লিঙ্গসমতার পক্ষে সোচ্চার এবং নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের ৪৩৩ দফা সুপারিশযুক্ত ঐতিহাসিক প্রতিবেদনের সমর্থক ছিলেন। প্রতিবেদনে গণমাধ্যমে নারীর অংশগ্রহণ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় আইন সংস্কার এবং অনলাইনে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে নতুন আইন প্রণয়নের আহ্বান জানানো হয়।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ধর্মীয় রক্ষণশীল গোষ্ঠীর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। ৩ মে ঢাকায় হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি সংগঠন প্রতিবাদ সমাবেশ করে কমিশন বাতিলের দাবি তোলে। এরপর নাদিরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে অনলাইনে ব্যক্তিগত হয়রানি, ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ এবং চাকরিচ্যুতির আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
২৬ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে বদলি করে ওএসডি পদে নিযুক্ত করে, যা কার্যত তাকে অধ্যাপনার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার শামিল। যদিও সিভিল সোসাইটির পক্ষ থেকে তার সুরক্ষা ও পদপুনর্বহালের দাবি জানানো হয়েছে, সরকার এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
পেন ইন্টারন্যাশনাল বিবৃতিতে বলেছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় নাদিরা ইয়াসমিনসহ সক্রিয় নাগরিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। সংস্থাটি অবিলম্বে তার পুনর্বহাল এবং হয়রানির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।