সর্বশেষ

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় ভয়াবহ আঘাতঃ ড. ইউনূস সরকারের এক বছরে সাংবাদিক নিপীড়ন ২৩০% বেড়েছে

Md Ahad পাবনা
প্রকাশিত: ৬ অগাস্ট ২০২৫, ১২:৫৭
বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় ভয়াবহ আঘাতঃ ড. ইউনূস সরকারের এক বছরে সাংবাদিক নিপীড়ন ২৩০% বেড়েছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদায়ের এক বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের গণমাধ্যম স্বাধীনতার চিত্র তুলে ধরে ভয়াবহ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রাইটস অ্যান্ড রিস্কস অ্যানালাইসিস গ্রুপ (আরআরএজি)। ‘‘বাংলাদেশঃ মিডিয়া ফ্রিডম মার্ডারড বাই ড. মুহাম্মদ ইউনূস’’ শিরোনামে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২০২৪ সালের আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা ও আইনি হয়রানি ২.৩ গুণ বেড়েছে।

 

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের জুলাইয়ের মধ্যে দেশে ৮৭৮ জন সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, যেখানে শেখ হাসিনার শাসনামলে এক বছরে এই সংখ্যা ছিল ৩৮৩। আরআরএজি-এর পরিচালক সুহাস চাকমা বলেন, ‘‘এটি একটি সংগঠিত মিডিয়া-বিরোধী অভিযান।’’

 

আইনি হয়রানির মাত্রাও বেড়েছে বিপুল হারে। ড. ইউনূস সরকারের এক বছরে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ১৯৫টি ফৌজদারি মামলা হয়েছে, যা আগের বছর ছিল মাত্র ৩৫টি, বৃদ্ধি প্রায় ৫৫৮%। সাংবাদিকদের স্বীকৃতি বাতিলের ঘটনা ঘটেছে ১৬৭ জনের ক্ষেত্রে, যা পূর্ববর্তী সরকারে একেবারেই ঘটেনি।

আর্থিক চাপ প্রয়োগের নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছে এই সরকারের আমলে। বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ১০৭ জন সাংবাদিককে নোটিশ পাঠিয়েছে, যা পূর্ববর্তী সরকারের আমলে ছিল অনুপস্থিত।

 

 

সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা ও হুমকি-ধামকিও বেড়েছে। গত এক বছরে ৪৩১ জন সাংবাদিক শারীরিক হামলা বা ফৌজদারি হুমকির মুখে পড়েছেন, যা আগের বছর ছিল ৩৪৮। ২৫ জুন ২০২৫, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে 'দৈনিক মাতৃজগত' পত্রিকার সাংবাদিক খন্দকার শাহ আলমকে হত্যার ঘটনাকে আরআরএজি ‘টার্গেটেড কিলিং’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

 

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) প্রয়োগ করে তিন সিনিয়র সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে সাইবার ট্রাইব্যুনাল। তারা হলেনঃ বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, প্রকাশক ময়নাল হোসেন চৌধুরী এবং বাংলা ইনসাইডারের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ বোরহান কবির।

 

দ্য ডেইলি স্টারের দিনাজপুর প্রতিবেদক কঙ্কন কর্মকারকে বরখাস্ত করা হয়, কারণ তিনি সংখ্যালঘু ভবেন্দ্র চন্দ্র রায়ের হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদন করেন, যা ভারতীয় গণমাধ্যমে গিয়েছে এবং ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তা উল্লেখ করে।

 

সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হিসেবে উঠে এসেছে ‘‘CA Press Wing Facts’’ নামক ইউনিটের সৃষ্টি, যা আরআরএজি বলছে, ‘‘রাষ্ট্রীয় প্রোপাগান্ডা চালানোর মুখোশপরা সেন্সরশিপ মেশিন।’’

 

প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যের ৪৭৪,৪৬৮ পাউন্ড অনুদান নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়, যা ব্রিটিশ সরকারের B-CAPP প্রোগ্রামের মাধ্যমে “CA Press Wing Facts” এর পেছনে ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ।

 

আরআরএজি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের হিউম্যান রাইটস কমিটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, বাংলাদেশে চলমান মিডিয়া নিপীড়নের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে।

সব খবর