সর্বশেষ

বাংলাদেশে সাংবাদিক হত্যা নিয়ে ARTICLE 19-এর উদ্বেগ, সুষ্ঠু তদন্তের দাবি

প্রকাশিত: ১২ অগাস্ট ২০২৫, ১৬:৪৫
বাংলাদেশে সাংবাদিক হত্যা নিয়ে ARTICLE 19-এর উদ্বেগ, সুষ্ঠু তদন্তের দাবি

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মতপ্রকাশ অধিকার সংস্থা ARTICLE 19 গাজীপুরের স্থানীয় দৈনিক ‘প্রতিদিনের কাগজ’-এর স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। সংস্থাটি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ্রক বিবৃতিতে বলে, তুহিন চার-পাঁচজন অস্ত্রধারী যুবকের হাতে এক তরুণের মারধরের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করছিলেন। তুহিনকে লক্ষ্য করে হামলাকারীরা প্রথমে থেমে গিয়ে ফিরে তাকায়, পরে তাকে তাড়া করে পাশের এক চায়ের দোকানে ঢুকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

 

ARTICLE 19 অবিলম্বে ন্যায়সঙ্গত ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, সাংবাদিকদের ওপর ক্রমবর্ধমান সহিংসতা বাংলাদেশে সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

 

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, তুহিন হত্যার আগে গত ২৫ জুন নরসিংদীর নবীনগরে দৈনিক মাতৃজগত-এর উপজেলা প্রতিনিধি খন্দকার শাহ আলমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। স্থানীয় সন্ত্রাসী ও সাবেক কারাবন্দী ‘টাইগার বাবুল ডাকাত’ নামে পরিচিত বাবুল মিয়া ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। সাংবাদিকের রিপোর্টিংয়ের প্রতিশোধ নিতে বাবুল মিয়া তাঁকে আক্রমণ করে বলে জানা যায়।

 

তাছাড়া, ৬ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে দৈনিক বাংলাদেশের আলো পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আনোয়ার হোসেন সোহরাবকে দিনের আলোয় হামলার শিকার হতে হয়। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের সামনেই ব্যাটারি ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার ঘটনার খবর সংগ্রহের সময় তাঁকে মারধর করা হয়, কিন্তু পুলিশ কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। সোহরাব বর্তমানে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

 

ARTICLE 19 জানিয়েছে, বাংলাদেশে সাংবাদিক সুরক্ষায় কোনো বিশেষ আইন নেই। অনেক সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি, যার মধ্যে রয়েছে ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহরুন রুনির হত্যা। এত বছরেও তদন্ত শেষ হয়নি, যা গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অপরাধের সংস্কৃতি ও দায়মুক্তি বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করে সংস্থাটি ।

 

আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সাম্প্রতিক এই হামলাগুলো গণমাধ্যমকর্মী, নাগরিক সমাজ ও গণতন্ত্রের পক্ষের কর্মীদের জন্য উদ্বেগজনক বলে ARTICLE 19 উল্লেখ করেছে। তারা স্মরণ করিয়ে দেয়, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

 

সংস্থাটির গ্লোবাল এক্সপ্রেশন রিপোর্ট ২০২৫ অনুযায়ী, মাত্র ১৫ স্কোর নিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাংলাদেশ ১২৭তম এবং ‘সংকটাপন্ন’ অবস্থায় রয়েছে। ARTICLE 19 তুহিন হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এ ধরনের ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সাংবাদিকদের ভয় ও প্রতিশোধের আশঙ্কা ছাড়া দায়িত্ব পালনের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

সব খবর