সর্বশেষ

সাদাপাথর থেকে রাংপানি—সিলেটে থামছে না পাথর-বালু লুট

প্রকাশিত: ২১ অগাস্ট ২০২৫, ১৫:১৭
সাদাপাথর থেকে রাংপানি—সিলেটে থামছে না পাথর-বালু লুট

সিলেটের সাদা পাথর ও জাফলংয়ের পর এবার জৈন্তাপুর উপজেলার রাংপানি পর্যটনকেন্দ্রে চলছে পাথর ও বালু লুট। শ্রীপুর সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে গঠিত জল-নুড়ি-পাথরের সৌন্দর্য আজ অসাধু চক্রের থাবায় ক্ষতবিক্ষত। স্থানীয়দের অভিযোগ, লুটপাটে জড়িত রয়েছেন রাজনৈতিক নেতাসহ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসৎ সদস্য।

 

গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে রাংপানিতে লুটপাট বেড়েছে। শ্রমিকরা সীমান্তের ওপার থেকে পাথর তুলে এনে বারকি নৌকা ও ট্রাকে পরিবহন করছেন। প্রতি ট্রিপে নৌকা থেকে ৮০০ টাকা এবং ট্রাক থেকে ৩ হাজার টাকা আদায় করা হয়। প্রতিদিন একটি নৌকা ৮–১০টি ট্রিপ দেয়, যেখানে ৬০–৮০ ঘনফুট পাথর পরিবহন হয়।

 

তরুণ সাংবাদিক রুমান আহমেদ জানান, টিলা কেটে বড় গর্ত করে পাথর তুলে হ্যামার দিয়ে ভেঙে তা নৌকায় তোলা হয়। শ্রমিকরা ছবি বা ভিডিও তুলতে দেখলে তেড়ে আসে। স্থানীয়রা জানান, আগে আওয়ামী লীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় লুট চললেও এখন বিএনপি ও যুবদলের কয়েক নেতা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পাথর রাখা হয় রাংপানি ক্যাপ্টেন রশিদ স্কুল অ্যান্ড কলেজের পেছনে, সেখান থেকে তা বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়।

 

অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা আব্দুল আহাদ, যুবদল নেতা দিলদার হোসেন, সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন ও জামায়াত নেতা আমির নূরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। তবে তারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

 

স্থানীয় ঘাট ও কোয়ারি নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যক্তিরা কেউ কেউ ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন, কেউ কেউ জানেন না কীভাবে পাথর আসছে। পরিবেশ আন্দোলন-বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক কাসমির রেজা বলেন, “সাদাপাথরের লুট বন্ধে প্রশাসন কঠোর হলে রাংপানিতে এমন হতো না।”

 

জৈন্তাপুর উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার লাবনী জানান, মঙ্গলবার ২৮ হাজার ঘনফুট বালু ও ২০ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে। আগের দিন আরও ৩৫ ট্রাক বালু ও ৯,৫০০ ঘনফুট পাথর জব্দ হয়।

 

তিনি বলেন, “জনগণের সচেতনতা ছাড়া এসব বন্ধ করা সম্ভব নয়। নিয়মিত মামলা ও পুনঃস্থাপন কার্যক্রম চলছে।”

সব খবর