ঢাকার কেরানীগঞ্জে বুড়িগঙ্গা নদী থেকে নারী ও শিশুসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ-পুলিশ। শনিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নদীর দুটি পৃথক স্থান থেকে এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলোর মধ্যে রয়েছেন ৩ বছরের এক শিশু, দুই নারী ও একজন পুরুষ। তাদের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি।
সদরঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) মো. সোহাগ রানা জানান, মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রথমে কেরানীগঞ্জের মীরেরবাগ কোল্ড স্টোরেজ এলাকার নদীপাড় থেকে ৩০ বছর বয়সী এক নারীর লাশ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ওই নারীর গলায় কালো বোরকা পেঁচানো ছিল এবং তার পরনে ছিল গোলাপি রঙের সেলোয়ার-কামিজ। এক ঘণ্টা পর একই স্থানে উদ্ধার করা হয় একটি শিশুর মরদেহ। শিশুটির বয়স আনুমানিক তিন বছর এবং তার গলায় ওড়না পেঁচানো ছিল।
এদিকে, কেরানীগঞ্জের জিনজিরা ইউনিয়নের মাদারীপুর জামে মসজিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় আরও দুইজনের মরদেহ। বরিশুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) মোক্তার হোসেন জানান, উদ্ধার হওয়া মরদেহের মধ্যে একজন পুরুষের বয়স প্রায় ৪০ বছর এবং এক নারীর বয়স আনুমানিক ৩০ বছর। পুরুষটির পরনে ছিল কালো প্যান্ট ও লাল চেক শার্ট, আর নারীর গায়ে ছিল ছাই রঙের গেঞ্জি ও লাল রঙের সেলোয়ার। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্নও পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে—মরদেহ উদ্ধারের সময় দেখা যায়, পুরুষ ও নারীর হাত একসঙ্গে বাঁধা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মৃত্যু ঘটেছে দুই থেকে তিন দিন আগে। লাশ ফুলে যাওয়ায় মুখমণ্ডল চেনা সম্ভব হয়নি। ফরেনসিক টিমকে অবগত করা হয়েছে, যাতে পরিচয় শনাক্ত করা যায়।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহাম্মদ আকতার হোসেন বলেন, মীরেরবাগ এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া মা-ছেলের লাশ এবং জিনজিরা ইউনিয়নের মাদারীপুর ঘাট থেকে উদ্ধার হওয়া নারী-পুরুষের লাশ একই দিনের ঘটনা। প্রাথমিকভাবে বিষয়টি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। তদন্ত শেষে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
স্থানীয়দের ধারণা, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে। তবে পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ছাড়া কিছু নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়।