সর্বশেষ

অ্যাম্বুলেন্স আটকে নবজাতকের মৃত্যুঃ মূলহোতা সবুজ দেওয়ান গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ২৩:৩৫
অ্যাম্বুলেন্স আটকে নবজাতকের মৃত্যুঃ মূলহোতা সবুজ দেওয়ান গ্রেপ্তার

শরীয়তপুরে রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখায় নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় মূলহোতা সবুজ দেওয়ানকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব ও পুলিশের যৌথ বাহিনী। শনিবার ভোরে সদর উপজেলার বেড়া চিকন্দী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। এর আগে শিশুটির বাবা নূর হোসেন সরদার শুক্রবার রাতে পালং মডেল থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

 

সবুজ দেওয়ান (২৮) শরীয়তপুর সদর উপজেলার ধানুকা এলাকার আবু তাহের দেওয়ানের ছেলে। মামলার এজাহার, রোগীর স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর এলাকার নূর হোসেন সরদারের স্ত্রী রুমা বেগম বৃহস্পতিবার দুপুরে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। শিশুটি কিছুটা অসুস্থ থাকায় চিকিৎসকের পরামর্শে সেদিন রাতেই তাকে ঢাকায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

 

তবে ঢাকাগামী ভাড়া করা অ্যাম্বুলেন্সটি স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স চালক সিন্ডিকেটের বাধার মুখে পড়ে। সবুজ দেওয়ান ও আবু তাহের দেওয়ান নামের দুই ব্যক্তি জোর করে অ্যাম্বুলেন্স চালকের কাছ থেকে চাবি কেড়ে নেন এবং তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। ফলে অ্যাম্বুলেন্সটি প্রায় ৪০ মিনিট আটকে থাকে, যার মধ্যেই নবজাতক শিশুটি মারা যায়।

 

এই হৃদয়বিদারক ঘটনার পর শিশুটির বাবা নূর হোসেন সরদার বলেন, “আমার সন্তানকে সময়মতো হাসপাতালে নিতে না পারায় তাকে হারাতে হলো। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন কাজ করার সাহস না পায়।”

 

র‍্যাব-৮ এর কোম্পানি কমান্ডার ও পুলিশ সুপার মীর মনির হোসেন জানান, “সবুজ দেওয়ানকে গ্রেপ্তার করে পালং মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”

 

স্থানীয়রা বলছেন, অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য দীর্ঘদিনের সমস্যা। রোগী পরিবহনে বাধা দেওয়া, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং প্রতিযোগিতার নামে সহিংসতা—এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা জরুরি।

 

এই ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে। নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে। তারা বলছে, চিকিৎসা সেবা নিয়ে এমন অমানবিক আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মামলার অন্যান্য আসামিদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। প্রশাসন বলছে, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে স্থানীয় পর্যায়ে অ্যাম্বুলেন্স পরিচালনায় নীতিমালা ও তদারকি জোরদার করা হবে।

সব খবর