ফরিদপুরের মধুখালীতে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র তামিম তালুকদারকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় শোকাহত তার পরিবার ও এলাকাবাসী। সৌদিপ্রবাসী শামীম তালুকদারের ছেলে তামিমকে বাসার পুরনো কাজের ছেলে তুহিন শেখ ও তার সহযোগী আমিরুল অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে। পরে মুক্তিপণ না পেয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে ডোবায় ফেলে দেয় তার মরদেহ।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৫ আগস্ট বিকেলে বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় বড় গোপালদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র তামিম (১১)। সন্ধ্যায় বাড়ি না ফেরায় তার মা খোঁজ শুরু করেন। রাতেই অপহরণকারীরা ফোনে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং টাকা না দিলে হত্যার হুমকি দেয়। এরপর তামিমের পরিবার মধুখালী থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ তুহিন শেখকে আটক করে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ১৮ আগস্ট রাতে কোরকদি ইউনিয়নের বাঁশপুর এলাকার একটি ডোবা থেকে আবর্জনা দিয়ে ঢেকে রাখা তামিমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে আমিরুল (২৫) নামের আরেক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, তামিমকে তার গেঞ্জি দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান জানান, এটি একটি পরিকল্পিত অপহরণ ও হত্যাকাণ্ড। আটক দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তে বেরিয়ে আসতে পারে আরও তথ্য ও সংশ্লিষ্টতা।
তামিমের পরিবার জানায়, তারা মুক্তিপণের টাকা দিতে প্রস্তুত ছিল, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সন্তান হারিয়ে শোকাহত পরিবার এবং পুরো এলাকাবাসী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। জানা গেছে, তামিমের বাবা সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরছেন, তার উপস্থিতিতেই দাফন সম্পন্ন হবে।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় ফরিদপুরসহ সারা দেশে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শিশু সুরক্ষা ও পারিবারিক আস্থার প্রশ্নে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে এই ঘটনা।