সর্বশেষ

সাদাপাথরে নজিরবিহীন লুটপাটে পর্যটন ও পরিবেশ বিপর্যস্ত

প্রকাশিত: ১২ অগাস্ট ২০২৫, ২৩:১৭
“৫ আগস্টের পরিবর্তন রাজনৈতিক হলেও পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। প্রশাসনের কোনো তদারকি নেই।”
সাদাপাথরে নজিরবিহীন লুটপাটে পর্যটন ও পরিবেশ বিপর্যস্ত

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জের ‘সাদা পাথর’ এলাকা, যা একসময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র ছিল, এখন ভয়াবহ লুটপাটের শিকার। ধলাই নদীর উৎসমুখে ভারত থেকে ভেসে আসা পাথরের স্তূপে গঠিত এই অঞ্চলটি এখন ক্ষতবিক্ষত।

 

স্থানীয়রা জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রকাশ্যে পাথর উত্তোলন শুরু হয়। আরেফিন টিলা, রোপওয়ে বাংকারসহ বিভিন্ন স্থানে পাথর তুলে ধ্বংস করা হয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। প্রভাবশালী নেতারা বসতবাড়ি কিনে সেখানে পাথর উত্তোলন করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

 

গত দুই সপ্তাহে পাহাড়ি ঢলের পর বালুর স্তর সরিয়ে কোটি কোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিরাতে শতাধিক ট্রাক পাথর নিয়ে কোম্পানীগঞ্জ ছাড়ছে, বিজিবি ও প্রশাসনের নীরবতায়।

 

১৪ জুন জাফলং পরিদর্শনে গেলে উপদেষ্টাদের গাড়িবহর আটকে দেন পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। তারা পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে স্লোগান দিলেও, তখনও লুটপাট চলছিল।

 

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক শাহ সাহেদা আখতার বলেন, “৫ আগস্টের পরিবর্তন রাজনৈতিক হলেও পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। প্রশাসনের কোনো তদারকি নেই।”

 

পরিবেশ অধিদপ্তর জানায়, ‘সাদা পাথর’ পরিবেশগতভাবে সংকটপূর্ণ এলাকা (ইসিএ) হিসেবে চিহ্নিত নয়, তাই অভিযান চালানো যায় না। খনিজসম্পদ অধিদপ্তর বলছে, “যারা দেখছেন, তারা কাজ করছেন”, তবে কারা দেখছেন, তা স্পষ্ট করেননি।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, মোবাইল কোর্ট চলছে, তবে ২৪ ঘণ্টা পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়। বিজিবি ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

 

২০১৭ সালে পাহাড়ি ঢলে জমা হওয়া পাথর সংরক্ষণের মাধ্যমে ‘সাদা পাথর’ পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিতি পায়। ভেসে আসা পাথর স্থাপত্যে ব্যবহৃত হয় এবং উত্তোলিত পাথরের চেয়ে দামি। কিন্তু এখন সেই প্রাকৃতিক সম্পদ লুটপাটে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।

সব খবর