সর্বশেষ

রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শত শত গাছ লুট, তদন্তের দাবি

প্রকাশিত: ২২ অগাস্ট ২০২৫, ১৬:৩৭
রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শত শত গাছ লুট, তদন্তের দাবি

রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অধিগ্রহণ করা ২০৫ বিঘার ক্যাম্পাস থেকে কোনো অনুমতি বা দরপত্র ছাড়াই শত শত গাছ কেটে বিক্রি করা হয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে ধাপে ধাপে এবং গত এক মাসে ব্যাপকভাবে গাছ কাটা হয়েছে, যা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী সিরাজুম মুনীর জানান, “গাছ কাটার অনুমতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রায় ৭০০ গাছ কাটা হয়েছে।” তিনি বলেন, এ ঘটনায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হোসাইন কনস্ট্রাকশন লিমিটেডকে শোকজ করা হয়েছে এবং তাদের জবাবের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, পুরো এলাকায় ৭,৩০০টি গাছ রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৫,৫০০টি উন্নয়ন কাজের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এখনো দরপত্র হয়নি বা কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। অথচ সরজমিনে দেখা গেছে, বহু গাছ গোড়া থেকে কেটে ফেলা হয়েছে, কিছু জায়গায় গর্ত তৈরি হয়ে পানি জমেছে, আবার কোথাও শাকসবজি চাষও হচ্ছে।

 

স্থানীয়রা জানান, এক মাস ধরে প্রতিদিন ট্রলির পর ট্রলি গাছ বাইরে নেওয়া হয়েছে। ববিতা বেগম ও শারমিন বেগম নামের দুই নারী বলেন, আগে যেখানে বাগান ছিল, এখন তা ফাঁকা মাঠে পরিণত হয়েছে। তারা আরও জানান, মঙ্গলবার সকালেও দুই ট্রলি গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক হাসিবুল হোসেন ও উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী নাজমুল হোসেন বলেন, তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন। অন্যদিকে, হোসাইন কনস্ট্রাকশনের রাজশাহী ব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেন দাবি করেন, তাদের কাজ কেবল বালু ভরাট, গাছ কাটার সঙ্গে তারা জড়িত নন।

 

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি-বেলার বিভাগীয় সমন্বয়কারী তন্ময় সান্যাল বলেন, “ক্যাম্পাসে গাছ রেখে অবকাঠামো নির্মাণ সম্ভব। অনুমতি ছাড়াই এতোগুলো গাছ কাটা হয়েছে, যা প্রশাসনিকভাবে গুরুতর অপরাধ।”

 

রাজপাড়া থানার ওসি হাবিবুর রহমান জানান, মিডিয়ার মাধ্যমে গাছ কাটার বিষয়টি জেনেছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নীরবতা ও দায় এড়ানোর প্রবণতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়রা দ্রুত তদন্ত ও জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা দাবি করেছেন।

সব খবর