সর্বশেষ

নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে ক্রেতার হাঁসফাঁস, বাজারে অস্থিরতা

প্রকাশিত: ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ২৩:৫৬
নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে ক্রেতার হাঁসফাঁস, বাজারে অস্থিরতা

দেশজুড়ে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে সাধারণ ক্রেতারা চরম বিপাকে পড়েছেন। গত এক মাসে পেঁয়াজ, ডাল, আটা, ডিম, মাছ ও সবজির দাম ১০ থেকে ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। আয় বাড়েনি, অথচ ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুণ—এমন বাস্তবতায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো হিমশিম খাচ্ছে।

 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৭.৫৬ শতাংশ, যা জুনে ছিল ৭.৩৯ শতাংশ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চলমান মূল্যবৃদ্ধি ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে এবং দীর্ঘমেয়াদে এটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস করছে।

 

রাজধানীর বাজারে ফার্মের ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১৫০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৮৫–৯০ টাকা কেজি, মসুর ডাল ১৬০ টাকা, খোলা আটা ৪৫ টাকা, সোনালি মুরগি ৩২০–৩৪০ টাকা, রুই মাছ ৪৫০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। সবজির বাজারেও অস্থিরতা—বেগুন ১৪০–১৮০ টাকা, টমেটো ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

 

বগুড়ার মহাস্থান হাটে পাইকারি বাজারে বেগুন, করলা, বরবটি, শসা ও কাঁচামরিচের দাম দুই মাসে প্রতি মণে ৮০০–১০০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অতিবৃষ্টির কারণে ফসল নষ্ট হওয়ায় সরবরাহ কমেছে, ফলে দাম বেড়েছে।

 

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারে তদারকির অভাব, সরবরাহ চেইনে ব্যাঘাত, ডলার সংকট, আমদানিনির্ভরতা এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের মজুদদারি—সব মিলিয়ে এক জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ভোক্তা অধিকার সংস্থা ‘ভোকতা’-র নির্বাহী পরিচালক মো. খলিলুর রহমান বলেন, “দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানতে হলে প্রশাসনিক নজরদারি, মজুদদারির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা, দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি এবং সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি জোরদার করতে হবে।”

 

বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন জানিয়েছেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে ভারত ছাড়াও অন্যান্য দেশ থেকে আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। চাহিদা অনুযায়ী যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকুই আমদানি করা হবে।

 

ভোক্তারা বলছেন, বাজারে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত না হলে অস্থিরতা বাড়বে। দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতি শুধু অর্থনৈতিক নয়, সামাজিক চাপও বাড়াচ্ছে। এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে সংকট আরও গভীর হবে।

সব খবর