মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান সংঘর্ষের ফলে নতুন করে প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে আশ্রয় নিয়েছে। যেকোনও সময় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
১৭ আগস্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা-বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের বৈঠকে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম। এক কর্মকর্তা জানান, “রাখাইনের সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গারা সীমান্তে জড়ো হচ্ছে এবং ধীরে ধীরে তারা সীমান্ত অতিক্রম করছে।”
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ মাসে নতুন করে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই সংখ্যা পূর্ববর্তী পরিকল্পনার তুলনায় অনেক বেশি, যা মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাকে আরও চাপে ফেলছে।
বৈঠকে রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল সংকটের বিষয়টিও গুরুত্ব পায়। কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছর রোহিঙ্গা জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানে ৯৫ কোটি ডলারের আবেদন করা হলেও এখন পর্যন্ত অর্ধেকের কিছু বেশি অর্থ সংগ্রহ সম্ভব হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে আরও ১৭ কোটি ডলারের প্রয়োজন রয়েছে। এই তহবিল সংগ্রহে জাতিসংঘে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোহিঙ্গা সংকট এখন শুধু মানবিক নয়, বরং রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের “Forcibly Displaced Myanmar Nationals” হিসেবে চিহ্নিত করলেও তাদের দীর্ঘমেয়াদি অবস্থান, আইনি স্বীকৃতি ও পুনর্বাসন নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এখনও কার্যকর সমাধান আসেনি।
রাখাইনের চলমান সহিংসতা, সীমান্তে নতুন আগমন এবং তহবিল সংকট—এই তিনটি বিষয় এখন রোহিঙ্গা সংকটকে আরও জটিল করে তুলছে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও জরুরি মানবিক সহায়তার আহ্বান জানানো হয়েছে।