কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে আবারও নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে, যা স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি কয়েক দফায় মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা নাফ নদী ও দুর্গম পাহাড়ি পথ ব্যবহার করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিনে অন্তত ২৮ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু সীমান্ত অতিক্রম করে আশ্রয় নিয়েছে।
নতুন অনুপ্রবেশকারীদের অধিকাংশই বলছেন, মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন, খাদ্য সংকট ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে তারা জীবন বাঁচাতে পালিয়ে এসেছেন। অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে কেউ কেউ আহত অবস্থায় এসেছেন, যাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে এই প্রবণতা রোহিঙ্গা সংকটকে আরও জটিল করে তুলছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, নতুন আসা রোহিঙ্গাদের প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করে আশ্রয় শিবিরে পাঠানো হয়েছে। তবে সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং বিজিবি, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে। উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে যাতে অনিয়ন্ত্রিত প্রবেশ ঠেকানো যায়।
এদিকে, রোহিঙ্গা শিবিরে অবস্থানরত পুরনো বাসিন্দারাও নতুন অনুপ্রবেশে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, শিবিরে জনসংখ্যা বাড়লে খাদ্য, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা সংকট আরও তীব্র হবে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (UNHCR) ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, তবে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিয়ানমারে চলমান সংঘাত ও রাজনৈতিক অস্থিরতা রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের মূল কারণ। তারা আশঙ্কা করছেন, যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়, তাহলে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকট আরও দীর্ঘস্থায়ী ও জটিল হয়ে উঠবে।