সর্বশেষ

গত সাত মাসে ৪৮৯ জন আদিবাসী মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকারঃ কাপেং ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৯ অগাস্ট ২০২৫, ২১:৪৭
সংগঠনটি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি ঘটনায় দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এবং এমন পরিবেশ গড়ে তুলতে যেখানে সকল নাগরিক জাতি, ধর্ম, ভাষা বা পরিচয় নির্বিশেষে সমান নিরাপত্তা ও মর্যাদা পাবে।
গত সাত মাসে ৪৮৯ জন আদিবাসী মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকারঃ কাপেং ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন

২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসে (১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জুলাই) সারাদেশে ৪৮৯ জন আদিবাসী নাগরিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংগঠন কাপেং ফাউন্ডেশন।

 

শুক্রবার প্রকাশিত তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূমি দখল, মিথ্যা মামলা, নারী ও শিশু নির্যাতন, যৌন সহিংসতা, শারীরিক হামলা, নির্বিচার গ্রেফতার, ধর্মান্তর, এবং রাজনৈতিক অধিকার হরণের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে, বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে।

 

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আদিবাসী নারীর উপর ২৪টি সহিংস ঘটনার মধ্যে ২১টি ঘটেছে পাহাড়ে এবং ৩টি সমতলে। এর মধ্যে ৪টি ধর্ষণ, ২টি দলবদ্ধ ধর্ষণ, ২টি ধর্ষণের পর হত্যা, ৭টি যৌন হয়রানি, ৫টি ধর্ষণের চেষ্টা, ১টি শ্লীলতাহানি ও ৩টি শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এসব ঘটনায় অন্তত ৬টি মামলা হয়েছে এবং ১২ জন গ্রেফতার হয়েছে।

 

ভূমি দখলের ঘটনায় রাঙামাটির বরকল উপজেলায় বিজিবি ক্যাম্প স্থাপনের জন্য স্থানীয়দের জমি দখলের চেষ্টা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এ সময় ৩৯টি জুমচাষি পরিবারের ১৩০ একর জমি দখলের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং এক বৌদ্ধ বিহারের জমি দখলের চেষ্টা করে প্রায় ৩০০টি গাছ কেটে ফেলা হয়। একইসাথে, বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমেও জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার লঙ্ঘনের ৩২টি ঘটনায় মোট ১৭০ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে নির্বিচার গ্রেফতার, মিথ্যা মামলায় হয়রানি, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি এবং ৩০ জন শিশুকে ধর্মান্তরের ঘটনা অন্তর্ভুক্ত।

 

কাপেং ফাউন্ডেশন বলছে, দীর্ঘদিনের বিচারহীনতার সংস্কৃতি অপরাধীদের উৎসাহিত করছে, যার ফলে একই ধরনের অপরাধ বারবার ঘটছে। ২০১৬ সালের গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল হত্যা, ২০২৪ সালের রাঙামাটিতে বৌদ্ধ বিহার ভাঙচুর, এবং ২০২৫ সালের ঢাকায় আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার মতো ঘটনা এই বাস্তবতার প্রমাণ।

 

সংগঠনটি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি ঘটনায় দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এবং এমন পরিবেশ গড়ে তুলতে যেখানে সকল নাগরিক জাতি, ধর্ম, ভাষা বা পরিচয় নির্বিশেষে সমান নিরাপত্তা ও মর্যাদা পাবে।

সব খবর