চলতি বছরের প্রথম আট মাসে দেশে ৩৯০ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে, যার মধ্যে ৪৩ জনকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছে এডুকো বাংলাদেশ।
শনিবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখানে আরও জানানো হয়, একই সময়ে ৩৪ জন শিশু অপহরণ ও পাচারের শিকার হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৮ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া ৮৩ জন কন্যাশিশু খুন হয়েছে এবং ৫০ জনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে, যার সঠিক কারণ জানা যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর সৈয়দা আহসানা জামান এ্যানি বলেন, “রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্য দিয়ে নারীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে, যাতে নারী ও কন্যাশিশুরা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারেন।” তিনি কর্মক্ষেত্রেও নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি ও বিশিষ্ট সমাজকর্মী ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, “নারী ও কন্যাশিশুর অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু তা এখনো কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি। বাল্যকাল থেকেই নারীদের প্রতি বৈষম্য দূর করতে হবে, তাদের পুষ্টি, শিক্ষা ও নিরাপত্তায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।”
নারী প্রতিনিধিত্ব প্রসঙ্গে তিনি জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে পাঁচবার আলোচনায় বিষয়টি উত্থাপন করা হলেও ১০০ আসনে সরাসরি নারী নির্বাচনের বিষয়ে কোনো ঐকমত্য হয়নি। তিনি বলেন, “এই ঘটনায় নারী রাজনৈতিক অধিকার পরাজিত হয়েছে, জয়ী হয়েছে পুরুষতন্ত্র।”
প্রতিবেদনটি কন্যাশিশুদের প্রতি সহিংসতা ও অবহেলার বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় নীতিমালার সংস্কার, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনি কাঠামোর কার্যকর প্রয়োগ।