বাংলাদেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহকে ‘পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা’ করা হয়েছে এমন অভিযোগে রাজধানীর রমনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন সালমানের মামা মোহাম্মদ আলমগীর। মামলায় ১১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সালমান শাহের স্ত্রী সামীরা হক, শিল্পপতি ও সাবেক চলচ্চিত্র প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুছি, চলচ্চিত্রের খলনায়ক ডন, ডেবিট, জাভেদ, ফারুক, মে-ফেয়ার বিউটি সেন্টারের রুবি, আব্দুস ছাত্তার, সাজু এবং রেজভি আহমেদ ফরহাদ।
এর আগে সালমান শাহের মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে রমনা থানায় মামলা নেওয়া হয়েছিল। তবে সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস বাদীপক্ষের করা রিভিশন মঞ্জুর করে মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। এর ফলে প্রায় তিন দশক পর সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় নতুন করে বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হলো।
সালমান শাহ ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রহস্যজনকভাবে মারা যান। তার মৃত্যুকে দীর্ঘদিন ধরে আত্মহত্যা হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও পরিবার বরাবরই দাবি করে আসছিল, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা।
সালমানের মা নীলা চৌধুরী, যিনি বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন, আদালতের নির্দেশের পর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “এখন একটাই চাওয়া, ছেলের হত্যার বিচার চাই।” তিনি আরও বলেন, “আমার ছেলের মৃত্যুকে বারবার আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আদালতের রিভিশন মঞ্জুরের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে, আমাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন নয়।”
তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন মামলার আসামিরা দেশত্যাগ করতে না পারে। “প্রশাসনকে এখন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে,” বলেন নীলা চৌধুরী।
সালমান শাহ ছিলেন নব্বই দশকের ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ। তার অকাল মৃত্যু আজও রহস্যে ঘেরা। নতুন করে মামলা গ্রহণের মাধ্যমে এই রহস্যের জট খুলবে কি না, তা এখন সময়ই বলে দেবে। তবে সালমানের পরিবার ও ভক্তদের কাছে এটি একটি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত পদক্ষেপ।