সর্বশেষ

মতামত

চাঁদাবাজি, খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাসে অভিযুক্তদের দলে ফিরিয়ে এনেছে বিএনপি

প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২১:২০
চাঁদাবাজি, খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাসে অভিযুক্তদের দলে ফিরিয়ে এনেছে বিএনপি

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবারও বিতর্কের ঝড় তুলেছে বিএনপি। একসময় যে দল মুখে শপথ নিয়েছিল “অপরাধীদের কোনো স্থান নেই দলে”, সেই বিএনপি আজ নিজের ঘোষিত অবস্থান থেকে সরে এসে খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আবারও দলে ফিরিয়ে নিয়েছে।


এই সিদ্ধান্ত শুধু রাজনৈতিক অস্থিরতা নয় এটি নৈতিকতার বিপর্যয়, আদর্শের পতন এবং জনগণের প্রতি প্রকাশ্য প্রতারণা।

 

বিএনপির অবস্থানের আমূল পরিবর্তন
 

একসময় বিএনপির মুখপাত্ররাই সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন যে কেউ অপরাধে জড়িত থাকুক না কেন, দলে তার কোনো স্থান নেই। কঠোর ভাষায় ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, নারী নির্যাতন, মাদক ব্যবসা কিংবা খুনের মতো অপরাধে লিপ্ত নেতাকর্মীদের বহিষ্কার করা হবে।
 

কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সেই দৃঢ়তা যেন হারিয়ে গেছে।

 

আজ দেখা যাচ্ছে, যাদের বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতি, ধর্ষণ, এমনকি রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে, সেই ব্যক্তিদেরই আবার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে দলে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এই পুনর্বাসনের ঘোষণা জনমনে একটাই প্রশ্ন তুলেছে—বিএনপি কি এখন অপরাধীদের জন্য আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে?

 

রাজনীতি মানে কেবল ক্ষমতা নয় নীতি, আদর্শ ও জনআস্থা। কিন্তু বিএনপির এই সিদ্ধান্তে সেই আস্থা ভয়াবহভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
 

যে দল একসময় আইনের শাসনের দাবি তুলত, ন্যায়বিচারের কথা বলত, তারাই আজ আইনের ঊর্ধ্বে অপরাধীদের পুনর্বাসন করছে।
 

জনগণ তাই প্রশ্ন তুলছে—বিএনপি কি এখন ক্ষমতার লোভে এমন পর্যায়ে নেমে গেছে, যেখানে ন্যায়-অন্যায়ের কোনো সীমারেখাই আর নেই?

 

জনমনে সৃষ্টি হয়েছে গভীর ক্ষোভ ও ঘৃণা। সাধারণ মানুষ বলছে—এটি রাজনৈতিক দূরদর্শিতা নয়, বরং অপরাধীদের প্রতি দলীয় তুষ্টি ও ব্যক্তিস্বার্থ রক্ষার ব্যর্থ প্রয়াস।

যে দল প্রকাশ্যে আইনের শাসনের দাবিদার, আজ তারাই সেই আইনকে উপহাস করছে।
 

বিচারাধীন মামলার আসামিদের, ধর্ষণ ও খুনের অভিযুক্তদের পুনরায় দলে নেওয়া কেবল নীতির লঙ্ঘন নয়, বরং রাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থার প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ। একটি সভ্য সমাজে অপরাধীদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া মানে হলো—অন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো, ন্যায়ের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া।

 

এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিএনপি শুধু জনগণের আস্থা হারায়নি, বরং নিজ দলের ভেতরেও তৈরি করেছে নৈতিক বিভাজন ও অসন্তোষ।

 

আত্মবিনাশের পথে এক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত

 

ইতিহাস সাক্ষী—যে দল নৈতিকতা হারায়, অপরাধকে প্রশ্রয় দেয়, সে দল শেষ পর্যন্ত নিজেই নিজের শত্রুতে পরিণত হয়।
 

বিএনপির এই সিদ্ধান্ত তাই শুধু রাজনৈতিক ভুল নয়, এটি আত্মবিনাশের পথের প্রথম পদক্ষেপ। অপরাধীকে পুনর্বাসন করে কোনো রাজনীতি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি এ সত্য বিএনপিকেও সময়ই শিগগির মনে করিয়ে দেবে।

সব খবর