বাংলাদেশের সামাজিক ও ধর্মীয় জীবনে সাম্প্রতিক সময়ে যে সহিংসতার ঘটনা ঘন ঘন ঘটছে, তার পেছনে অন্যতম প্ররোচক শক্তি হলো জামায়াতে ইসলামী। নামের সঙ্গে ইসলাম থাকলেও এ দলটির কর্মকাণ্ড ইসলামের মৌলিক শিক্ষা ও সুন্নি ঐতিহ্যের সম্পূর্ণ বিপরীতে। বরং এটি ধর্মকে আড়াল করে রাজনৈতিক ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য সহিংসতা, বিভাজন এবং হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্ব সুন্নি আন্দোলন ও বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লবের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা ইমাম হায়াত যথার্থভাবেই বলেছেন ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী সব মানুষকে নিজের ধর্ম, মত, পথ এবং আদর্শ অনুসারে স্বাধীন ও নিরাপদে চলতে হবে। কেউ কারো ওপর আঘাত চালাতে পারবে না।” অথচ জামায়াত ইসলামকে ব্যবহার করছে বিভাজনের হাতিয়ার হিসেবে। বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রমাণ করছে “ইসলামের শত্রু জামাত, সুন্নিদের শত্রু জামাত, মাজারে হামলাকারী জামাত, ইমামদের খুনী জামাত।”
ধর্মের আড়ালে রাজনৈতিক আগ্রাসন
বাংলাদেশে জামায়াত দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে ইসলামী দল হিসেবে উপস্থাপন করেছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ইসলামের শিক্ষা, আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য কিংবা সুন্নি সম্প্রদায়ের কল্যাণের সঙ্গে এ দলের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং সুযোগ পেলেই তারা মাজারে হামলা চালিয়েছে, পীর ও ইমামদের হত্যা করেছে, খানকায় অগ্নিসংযোগ করেছে।
শুধু তাই নয়, সুন্নি সমাজের ভেতরে বিভাজন সৃষ্টির কৌশলও নিয়েছে তারা। এর ফলে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট হয়েছে, সামাজিক স্থিতিশীলতা ভেঙে পড়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড ইসলামকে নয়, বরং জামায়াতের ক্ষমতালোভী রাজনীতিকে সামনে নিয়ে এসেছে।
সহিংসতার ভয়াবহ উদাহরণ
মানিকগঞ্জ, ভোলা ও হাটহাজারীসহ দেশের নানা স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ইমাম হত্যা ও মাজারে হামলার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আরও ভয়াবহ হলো,৯৬টি মাজার ভাঙা হয়েছে, কবর থেকে লাশ উঠিয়ে এনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। মানবতার এই চরম অবমাননা ইসলামের কোনো শিক্ষা নয়; বরং তা জাহান্নামী কর্মকাণ্ড ছাড়া কিছুই নয়।
মতাদর্শের মূলেই বিভাজন
জামায়াতের মতাদর্শিক প্রবর্তক আবুল আ’লা মওদুদী পাকিস্তানের আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত। তার চিন্তাধারার ভিত্তিতেই জামায়াতের রাজনীতি দাঁড়ানো, যা ইসলামের আধ্যাত্মিক শিক্ষা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। মওদুদীবাদের উত্তরসূরি জামায়াত আসলে রাজনৈতিক বিভাজন আর সহিংসতার প্রতীক।
বাংলাদেশের শান্তি ও সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষার স্বার্থে এখনই নাগরিক সমাজ, ধর্মীয় নেতৃত্ব এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে একসাথে দাঁড়াতে হবে।
জামায়াতে ইসলামী নামের সঙ্গে ইসলাম জুড়লেও বাস্তবে এরা ইসলামের শত্রু। মাজার ভাঙা, কবর থেকে লাশ তুলে পুড়িয়ে ফেলা, ইমাম হত্যা—এসব কর্মকাণ্ডই প্রমাণ করে যে এরা ধর্ম নয়, রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য সহিংসতাকে হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে। বাংলাদেশের শান্তি, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং ধর্মীয় সহনশীলতার স্বার্থে এখনই জামায়াতকে প্রকাশ্যে প্রতিহত করা জরুরি।
যারা মাজার ভাঙে, কবর থেকে লাশ তুলে পুড়িয়ে ফেলে তারা ইসলামের নয়, তারাই জাহান্নামী।