খাগড়াছড়ির সিঙ্গিনালা এলাকায় অষ্টম শ্রেণির এক মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনার পর থেকেই খাগড়াছড়ি শহর ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা বাড়তে থাকে। শনিবার দুপুরে মহাজনপাড়ায় উভয় পক্ষের মধ্যে সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গুইমারা উপজেলা সদরে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
এ ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
শনিবার রাতে জেএসএসের কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার বিভাগের সদস্য জুপিটার চাকমার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের বর্তমান বাস্তবতা এবং দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে ‘জুম্ম ও বাঙালিদের মধ্যে সম্প্রীতি’ রক্ষা করা জরুরি। তারা ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।
বুধবার সেনাবাহিনীর সহায়তায় ধর্ষণ মামলার আসামি শয়ন শীল (১৯) কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’ আধাবেলা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। অবরোধ চলাকালে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বাঙালি অধিবাসীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে, যা পরে পৌর শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
জেএসএস বলছে, পাহাড়ে বারবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, কারণ অপরাধীরা শাস্তি পাচ্ছে না। তারা দাবি করে, সিঙ্গিনালাসহ পূর্ববর্তী সব ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
এদিকে সংঘাতের কারণে খাগড়াছড়িতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হোটেল, রিসোর্ট ও পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে বুকিং বাতিলের ঘটনা ঘটেছে। অনেক পর্যটক নিরাপত্তার অভাবে আগেভাগেই শহর ছেড়ে চলে গেছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, সংঘাতের কারণে পর্যটন ব্যবসায় বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
জেএসএস সংঘাতকে ‘সাম্প্রদায়িক সহিংসতা’ হিসেবে অভিহিত করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং প্রশাসনকে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় থাকে।