পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৩০ হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী চার দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের গণছুটি কর্মসূচি শুরু করেছেন। এর জবাবে সরকার রোববার রাতে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে কর্মস্থলে ফিরে না এলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ অত্যাবশ্যক পরিষেবা। এ সেবায় বাধা দেওয়া বা বিঘ্ন ঘটানো আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।” আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলা হয়, গণছুটির নামে অনুপস্থিত কর্মীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজে ফিরতে হবে, নইলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আন্দোলনকারীরা দাবি করছেন, আরইবি-পিবিএস একীভূতকরণ, চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের নিয়মিতকরণ, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং কর্মঘণ্টা নির্ধারণসহ চার দফা দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে কর্মসূচি নিয়েছেন।
পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সহ-দপ্তর সম্পাদক অঞ্জু রানী মালাকার বলেন, “গত বছর গঠিত কমিটির রিপোর্ট এখনও প্রকাশ হয়নি। নতুন দুটি কমিটিও রিপোর্ট দেয়নি। তাই আন্দোলনে ফিরতে হয়েছে।” আন্দোলন চলাকালীন জরুরি সেবা চালু রাখতে উপকেন্দ্রে দু’জন করে কর্মী অবস্থান করবেন বলে জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, আন্দোলনকারীদের দাবির বিষয়ে সরকার সংবেদনশীল। বদলিকৃত ও বরখাস্ত কর্মীদের পুনর্বহালের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “আন্দোলনের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হলে সরকার কঠিন ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “দেশবিরোধী শক্তি আন্দোলনে ইন্ধন দিচ্ছে।” যদিও আন্দোলনকারীরা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগ সরকারের সময় থেকেই আন্দোলন করছি। এখানে কোনো রাজনৈতিক ইন্ধন নেই।”
গত বছর পল্লী বিদ্যুৎ আন্দোলনের সময় দেশে ব্ল্যাকআউট পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তখন সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেয়, মামলা ও গ্রেপ্তার হয়। আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, সেই সময় কয়েক হাজার কর্মীকে চাকরিচ্যুত, বদলি ও হয়রানি করা হয়, যা এখনও চলমান।