দেশে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পে রাজধানী ঢাকায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে অনুভূত ৫.৭ মাত্রার এই ভূকম্পন ২৬ সেকেন্ড স্থায়ী হয়। কাঁপুনিতে আতঙ্কিত মানুষ ভবন ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসে, বহু ভবনে ফাটল ও পলেস্তরা খসে পড়ে, কয়েকটি ভবন হেলে যাওয়ার খবরও পাওয়া যায়।
পুরান ঢাকার আরমানিটোলার কসাইটুলি এলাকায় একটি ৮ তলা ভবনের পাশের দেয়াল ও কার্নিশ খসে রাস্তায় পড়ে তিন পথচারী নিহত হন। ফায়ার সার্ভিস জানায়, ঘটনাস্থলে থাকা স্থানীয় বাসিন্দারা আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা রাফিউল ইসলাম (২২), হাজী আবদুর রহিম (৪৭) এবং তার শিশু ছেলে মেহরাব হোসেন রিমন (১২)–কে মৃত ঘোষণা করেন। রাফিউল ইসলাম স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
ঢাকার বিভিন্ন স্থানে আরও ব্যাপক ক্ষতির খবর আসতে থাকে। বাড্ডা লিংক রোড, রামপুরার বৌ বাজার, হাতিরপুল, সেন্ট্রাল রোড, ধানমন্ডি ২৭, এলিফেন্ট রোড, গুলশান, নিউ মার্কেট– এসব এলাকায় ভবন হেলে পড়া, ফাটল ধরা ও পলেস্তরা ঝরে পড়ার ঘটনা ঘটে। নিউ মার্কেট থানার ভবনের তিনটি তলায় ফাটল দেখা গেছে বলে জানান ওসি মাহফুজুল হক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান, মুহসীন হল, কবি জসীমউদ্দিন হলসহ একাধিক হলে পলেস্তরা খসে পড়ে। আতঙ্কে ছাত্রদের কয়েকজন ভবন থেকে লাফিয়ে বা সিঁড়ি বেয়ে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন। ছাত্রদল নেতা তানভীর বারী হামিমের পা ভেঙে যায়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অন্তত ৪১ জন চিকিৎসা নিয়েছেন, এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থীও আছেন। অনেক এলাকায় বৈদ্যুতিক সংযোগ, মোবাইল নেটওয়ার্ক ও গ্যাস সরবরাহে সাময়িক বিঘ্ন দেখা দেয়।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা নজরদারির নির্দেশ দিয়ে জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।