চট্টগ্রামের কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর গোলচত্বর এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই দক্ষিণ চট্টগ্রামের যাত্রীদের নিত্যদিনের দুর্ভোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। পরিবহন শ্রমিক সংগঠন এবং প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় সেতুর গোলচত্বরের খোলা জায়গা পুরোপুরি দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ বাস-সিএনজি স্ট্যান্ড। এর ফলে প্রতিদিন নিত্যদিনের যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, যা বছরের পর বছরও দূর হচ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর চারপাশের খালি জায়গা নানা ধরনের যানবাহনের জন্য অবৈধ স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে। পায়ে হেঁটে রাস্তা পারাপারেরও সুযোগ নেই। স্থানীয় যাত্রীরা জানান, প্রতিদিন দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ কক্সবাজার ও বান্দরবান রুটের যাত্রীরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই যানজটে আটকা পড়ে।
চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন রুটে এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রতিটি উপজেলাসহ কক্সবাজার ও বান্দরবান রুটে অন্তত ২১ ধরনের যানবাহন চলাচল করে। শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজার ইজারাদার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ–ভারত যৌথ কোম্পানি সেল–ভ্যান জেভির প্রকল্প ব্যবস্থাপক সুমন ঘোষ জানান, সেতুর উপর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২৫ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করে এবং দিন দিন সংখ্যা বাড়ছে।
স্থানীয়দের এবং ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অবৈধভাবে দাঁড়ানো বাস, জিপ, টেম্পু, হিউম্যান হলার এবং সিএনজি প্রতিদিন এই এলাকায় চলাচলের শৃঙ্খলা ভেঙে দিচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার খোলা জায়গা দখল করে যাত্রী ওঠানামা করছে এসব যানবাহন। ট্রাফিক পুলিশ যত চেষ্টা করলেও সিন্ডিকেট এবং মালিকদের প্রভাবের কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
বিশেষ করে স্কুল–কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অফিসগামী কর্মী, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ যাত্রীরা ভোর থেকে রাত পর্যন্ত এ দুর্ভোগে পড়ে। দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে আসা সকল যানবাহনের মূল স্টপেজ হওয়ায় গোলচত্বরে যানজট আরও গুরুতর আকার নেয়। শাহ আমানত সেতুর গোলচত্বর বৃহত্তর চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল হওয়ায় এই পরিস্থিতি নগরের যানপরিবহনকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে।
স্থানীয়রা এবং ট্রাফিক কর্মকর্তারা মনে করেন, অবৈধ স্ট্যান্ডগুলো সরানো না হলে দৈনন্দিন যাত্রীদের দুর্ভোগ চলতেই থাকবে। সড়কশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং যানজট কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।