বাংলাদেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতি নিয়ে ক্ষুরধার মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, কথাসাহিত্যিক ও অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন,
“দেশে শিক্ষার কোনো গুরুত্ব দেখছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন বাড়ানো হলেও প্রাথমিক ও স্কুল শিক্ষকদের প্রতি নজর দেওয়া হচ্ছে না। মৌলিক সংস্কারের চিন্তা অনুপস্থিত। যারা সংস্কারের আলাপ করছেন, তাদেরও শিক্ষার অভাব আছে।”
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইসফেনদিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে আবু খালেদ পাঠান সাহিত্য পুরস্কার ২০২৫ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষা ও সমাজ প্রসঙ্গে বক্তৃতায় তিনি আশার গুরুত্ব উল্লেখ করে বলেন,
“আশাবাদ একটি মোমবাতির মতো। একটি মোমবাতির আলো দিয়ে অসংখ্য মোমবাতি জ্বালানো যায়। যে হাতে আশার মোমবাতি থাকে, সে পুরো দেশকে জাগিয়ে তুলতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, সংস্কৃতির শিক্ষা ও শিক্ষার সংস্কৃতি—এই দুই ক্ষেত্র সমভাবে এগোলে দেশ এগিয়ে যাবে। কিন্তু বর্তমানে বিতর্কের জায়গায় কেবল তর্ক হচ্ছে, ফলে শিক্ষা ও সমাজ কাঙ্ক্ষিত পথে এগোচ্ছে না। তার মতে, এ ধরনের অন্ধকার সময়ে আবু খালেদ পাঠান ফাউন্ডেশনের মতো প্রতিষ্ঠানই কিছুটা আশার আলো জ্বালাচ্ছে।
এবারের আবু খালেদ পাঠান সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কথাসাহিত্যিক সৈয়দ কামরুল হাসান এবং প্রাবন্ধিক ও নাট্যকার গোলাম শফিক। পুরস্কার হিসেবে তাদের হাতে নগদ ২৫ হাজার টাকা, ক্রেস্ট, উত্তরীয় ও শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন লেখক ও সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক আহমদ বশীর, লেখক-গবেষক আলতাফ পারভেজ, কবি উপল হাসান এবং ফাউন্ডেশনের সভাপতি নায়লা ইয়াসমিন।
আলতাফ পারভেজ বলেন, “এখন মানুষ ইট, বালু, সিমেন্ট আর টাকা—এই চারটিকেই ভালোবাসে। আমাদের বড় লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে, দুঃসাহসিক সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা বাড়াতে হবে। না হলে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়বে।”
এছাড়া কবি সদরুল উলা, সাংবাদিক সাইফুল হক মোল্লা দুলু, গবেষক মু আ লতিফ, শিশুসাহিত্যিক মাহফুজুর রহমান, এয়ার ভাইস মার্শাল আবদুল মতিন সানাউল হকসহ অনেকে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন লেখক-গবেষক মার্জিয়া লিপি।
শিল্পী ও কবি কফিল আহমেদের গান পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়। উল্লেখ্য, গত বছর এই পুরস্কার পেয়েছিলেন কবি ও সংগীতশিল্পী কফিল আহমেদ এবং কবি-প্রাবন্ধিক আফরোজা সোমা।