চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ককে চার লেনে উন্নীত করার দাবিকে উপেক্ষা করে আংশিক সম্প্রসারণ কাজ শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটির প্রস্থ মাত্র ৬–৭ মিটার। মাঝখানে কোনো ডিভাইডার না থাকায় এটি একটি সংকীর্ণ দুই লেনের আঞ্চলিক মহাসড়ক। প্রতিদিন হাজারো যাত্রীবাহী ও কৃষিপণ্যবাহী যানবাহন এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। এটি চুয়েটের প্রায় ৪,৫০০ শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীর যাতায়াতের প্রধান পথ।
২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই সড়কে বাসচাপায় দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত হন। এরপর শিক্ষার্থীরা চার দিন ধরে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। তখন সরকারি উচ্চপর্যায়ের আশ্বাসে বলা হয়, এক বছরের মধ্যে সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হবে। সেই আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন স্থগিত করা হয়।
কিন্তু বর্তমানে সওজ যে সম্প্রসারণ কাজ শুরু করেছে, তা আংশিক এবং চার লেনের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। চলমান প্রকল্পে মোহরা থেকে রাউজানের গশ্চি পর্যন্ত ১৩.৪ কিলোমিটার সড়ক সম্প্রসারণ করা হচ্ছে, যার ব্যয় প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এতে মাটি প্রস্তুত, পেভমেন্ট সম্প্রসারণ, ড্রেন নির্মাণ ও সুরক্ষা কাঠামো অন্তর্ভুক্ত থাকলেও ডিভাইডার নির্মাণের কোনো বাজেট নেই।
প্রকল্প শেষে সড়কের গড় প্রস্থ হবে সাড়ে ৯ মিটার, যা তিন লেনের মানেরও নিচে। ফলে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে বলে মনে করছেন ব্যবহারকারীরা।
চুয়েটের আন্দোলন সমন্বয়কারী আদিল রায়হান বলেন, “আমাদের চার লেনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। এখন শুধু সামান্য সম্প্রসারণ করা হচ্ছে, যা ঝুঁকি কমাবে না।”
সওজ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরী জানান, “চার লেনের পরিকল্পনা থাকলেও মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবটি এগোয়নি। তাই ছোট অংশে কাজ শুরু করেছি।”
স্থানীয় বাসিন্দা ব্যাংকার মোহাম্মদ আনিস বলেন, “ডিভাইডার ছাড়া সম্প্রসারণ কোনো কার্যকর সমাধান নয়।” সাংবাদিক এসএম ইউসুফ উদ্দিন বলেন, “নামমাত্র চওড়া করে দায় সারছে সড়ক বিভাগ, এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বাড়বে।”
চলমান প্রকল্পটি ২০২৫ সালের ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা শিগগিরই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।