সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘নাচ–গান’ হবে এমন ধারণা থেকে একদল ব্যক্তি বাধা দিতে এসেছিলেন। তবে পরে বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে মিটে যায়। মঙ্গলবার বিকেলে পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক লালবাগ কেল্লায় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠান শুরুর আগে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক রেজাউদ্দিন স্টালিন জানান, “নাচ–গান হবে” এমন খবর শুনে কিছু ব্যক্তি আপত্তি জানাতে আসেন। তিনি তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানান, এটি মূলত ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর স্মরণে সংগীতানুষ্ঠান, কোনো বাণিজ্যিক বা বিনোদনমূলক নাচ–গান নয়। বিষয়টি বুঝিয়ে বলার পর তাঁরা শান্তভাবে চলে যান।
পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামীও বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “এটা ছিল একটি ভুল বোঝাবুঝি। যারা আপত্তি জানিয়েছিলেন, তাঁদের বুঝিয়ে বলা হয়, এরপর তাঁরা চলে যান।”
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান, উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতজ্ঞ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর জন্মদিন ছিল বুধবার। তাঁর স্মরণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন তাঁর উত্তরসূরি সাধক ও নবীন প্রজন্মের শিল্পীরা। তাঁরা সুরের মাধ্যমে প্রয়াত ওস্তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং শ্রোতাদের মোহিত করেন।
অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর প্রপৌত্র সিরাজ আলী খানের সরোদবাদন। তাঁর পরিবেশনায় শ্রোতারা মুগ্ধ হন এবং অনুষ্ঠানের আবহে ছড়িয়ে পড়ে শ্রদ্ধা ও সুরের মেলবন্ধন।
সংস্কৃতিমনা দর্শকরা মনে করেন, এমন আয়োজন শুধু সংগীতের প্রতি শ্রদ্ধা নয় বরং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে আয়োজকদের আরও স্পষ্টভাবে অনুষ্ঠান সম্পর্কে তথ্য প্রচার করার পরামর্শ দিয়েছেন অনেকে।
এই আয়োজনে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা বলেন, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর মতো মহান সংগীতজ্ঞের স্মরণে অনুষ্ঠান আয়োজন করা মানে দেশের সাংস্কৃতিক শিকড়কে সম্মান জানানো। তাঁরা আশা করেন, এমন আয়োজন নিয়মিত হবে এবং নতুন প্রজন্মকে সংগীতের প্রতি আগ্রহী করে তুলবে।