সর্বশেষ

আমিরাতে প্রবাসীদের ধরপাকড়, নিঃস্ব হয়ে ফিরছেন শত শত বাংলাদেশি

প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:২৫
আমিরাতে প্রবাসীদের ধরপাকড়, নিঃস্ব হয়ে ফিরছেন শত শত বাংলাদেশি

সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় জোরদার হওয়ায় শত শত বাংলাদেশি প্রবাসী আটক হয়ে দেশে ফিরছেন। অনেকেই অভিযোগ করছেন, দেশীয় স্পন্সরকে মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়ার পরও ভিসা নবায়ন করা হয়নি। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা অবৈধ হয়ে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত কারাভোগ শেষে এক কাপড়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন।

 

সম্প্রতি শারজাহ শহরে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করা কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের মোহাম্মদ কামরুল দুই বছর অবৈধভাবে বসবাসের পর আটক হন। প্রথমে শারজার কারাগারে রাখা হলেও পরে তাকে আবুধাবির সুইহান কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে গত ১৮ সেপ্টেম্বর দেশে ফেরেন তিনি। একই ফ্লাইটে আরও ১৭ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরে আসেন। কামরুল জানান, সাত বছর আমিরাতে থাকার পর শেষবার ভিসা নবায়নের জন্য স্থানীয় বাংলাদেশি স্পন্সরকে সাত হাজার দিরহাম (প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা) দিলেও কোনো কাজ হয়নি।

 

এমন ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছেন বরিশালের মোহাম্মদ শাহীন, বগুড়ার বাবুল মিয়া, নোয়াখালীর সুবর্ণচরের জাকির হোসেন, চাঁদপুর মতলবের ছমির উদ্দিন এবং সিলেটের মোহাম্মদ মিজান। তাদের অভিযোগ, স্পন্সরের অবহেলা ও প্রতারণার কারণেই তারা অবৈধ হয়ে পড়েন এবং কারাভোগের পর দেশে ফিরতে বাধ্য হন। মিজান জানান, সুইহান কারাগারে অসংখ্য বাংলাদেশি এখনো আটক রয়েছেন। কেউ কেউ ভিজিট ভিসায় গিয়ে অবৈধভাবে থাকার পর ধরা পড়েছেন। কারাভোগের মেয়াদ শেষ হলে তাদের নির্বাসিত করা হচ্ছে।

 

আবুধাবি দূতাবাসের শ্রম কাউন্সেলর মোহাম্মদ উল্লাহ খান জানান, চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত আউটপাসের মাধ্যমে ৫০২ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে আগস্ট মাসেই ফিরেছেন ১৮৪ জন। সর্বশেষ ৯ দিনে নির্বাসিত হয়েছেন আরও ৭৯ জন। যাদের সঙ্গে পাসপোর্ট ছিল, তাদের তথ্য নথিভুক্ত করা হয়নি।

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুবাই ও উত্তর আমিরাতের ছয়টি প্রদেশ থেকে আরও বেশি বাংলাদেশি নির্বাসিত হচ্ছেন। তবে সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। দুবাই কনস্যুলেট থেকেও সাম্প্রতিক আউটপাসের সংখ্যা নিশ্চিত করা যায়নি।

 

আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ জানান, অবৈধ বাংলাদেশির সঠিক সংখ্যা দূতাবাসের কাছে নেই। অধিকাংশ প্রবাসী যোগাযোগ করেন না। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অভিযোগ করলেও অনেক সময় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না। তবে বাংলাদেশ মিশনের তথ্যমতে, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেওয়া সাধারণ ক্ষমায় প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি বৈধতা নিশ্চিত করেছেন। এ সময় প্রায় ৬১ হাজার ই-পাসপোর্ট ও ১৩ হাজার এমআরপি পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। একই সময়ে ট্রাভেল পারমিট নিয়ে দেশে ফেরেন পাঁচ হাজার ৬৫৭ বাংলাদেশি।

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, স্পন্সরদের অবহেলা ও প্রবাসী কর্মীদের সচেতনতার অভাবে হাজারো পরিবার নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরছে, যা প্রবাসী আয় নির্ভর অর্থনীতির জন্যও হুমকিস্বরূপ।

সব খবর

আরও পড়ুন

কারাবন্দী অবস্থায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মুরাদ হোসেনের মৃত্যু

কাশিমপুর কারাগার নিয়ে ফের বিতর্ক কারাবন্দী অবস্থায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মুরাদ হোসেনের মৃত্যু

রাজধানীসহ দুই জেলায় নাশকতার ঘটনা, দেশব্যাপী বাড়ছে জনআতঙ্ক

আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ রাজধানীসহ দুই জেলায় নাশকতার ঘটনা, দেশব্যাপী বাড়ছে জনআতঙ্ক

ময়মনসিংহে গানপাউডার দিয়ে ট্রেনের বগিতে আগুন

নাশকতার চেষ্টা ব্যর্থ ময়মনসিংহে গানপাউডার দিয়ে ট্রেনের বগিতে আগুন

ঢাবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার লাভলু মোল্লাহর বাসায় শিবিরের মব আক্রমণ ও গ্রেপ্তার

শেখ হাসিনার রায় নিয়ে পোস্ট ঢাবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার লাভলু মোল্লাহর বাসায় শিবিরের মব আক্রমণ ও গ্রেপ্তার

প্রতিদিন ১৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্যে চট্টগ্রামের ৫৭ খালের সর্বনাশ

পরিবেশ সংকট প্রতিদিন ১৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্যে চট্টগ্রামের ৫৭ খালের সর্বনাশ

আওয়ামী লীগের ওপর দায় চাপাতে দেশজুড়ে অগ্নিসংযোগ, নাশকতা দুর্বৃত্তদের

সর্বাত্মক শাটডাউন কর্মসূচি আওয়ামী লীগের ওপর দায় চাপাতে দেশজুড়ে অগ্নিসংযোগ, নাশকতা দুর্বৃত্তদের

রাজধানী ঢাকায় একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগ

শহরজুড়ে আতঙ্ক-স্থবিরতা রাজধানী ঢাকায় একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগ

যৌতুকের জন্য বউ পিটিয়ে জেল খাটা কর্মকর্তা এখন বরিশালের ডিসি

যৌতুকের জন্য বউ পিটিয়ে জেল খাটা কর্মকর্তা এখন বরিশালের ডিসি