সর্বশেষ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজটে ভোগান্তি

ইসলামী ব্যাংকের ওএসডি কর্মকর্তাদের বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৫০
ইসলামী ব্যাংকের ওএসডি কর্মকর্তাদের বিক্ষোভ

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের (আইবিবিএল) বরখাস্ত ও ওএসডি (অফিস সংযুক্ত) কর্মকর্তাদের আন্দোলন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। চাকরিচ্যুত ও ওএসডি হওয়া কয়েক হাজার কর্মকর্তা শনিবার সকালে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ফৌজদারহাট এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। সকাল ১১টা থেকে শুরু হওয়া এ অবরোধে মহাসড়কের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।

 

অবরোধকারীরা জানান, তাদের ছয় দফা দাবি মেনে না নিলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে—


১. চাকরিচ্যুত সবাইকে স্বপদে বহাল করা,
২. হাজারো কর্মকর্তার ওএসডি আদেশ প্রত্যাহার,
৩. কর্মচারীদের ওপর আরোপিত শর্তসাপেক্ষ মূল্যায়ন পরীক্ষা বন্ধ,
৪. শাস্তিমূলক বদলি বন্ধ,
৫. সব কর্মচারীর জন্য ন্যায্য কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা,
৬. ব্লক করা বেতন অ্যাকাউন্ট ও অফিসিয়াল আইডি পুনর্বহাল করা।

 

শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বরখাস্ত ও ওএসডি কর্মচারীরা জানান, ইসলামী ব্যাংকের এই সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত সাড়ে ৫ হাজার পরিবার। অফিসিয়াল আইডি ও বেতন অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেওয়ায় তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

 

চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা মো. এমদাদ হোসেন বলেন, “আমাদের আজ ব্যাংকে থাকার কথা ছিল, কিন্তু দাঁড়াতে হয়েছে রাজপথে। আদালতের আদেশ অমান্য করে প্রহসনের পরীক্ষা নিয়ে ৩০০ জনকে চাকরিচ্যুত ও ৫ হাজারের বেশি কর্মীকে ওএসডি করা হয়েছে।”

 

 

আরেক কর্মকর্তা হুমায়ুন মুখতার রশিদ বলেন, “আমাদের পরিবার পুরোপুরি বেতনের ওপর নির্ভরশীল। এখন বেতন পাচ্ছি না, অ্যাকাউন্টও বন্ধ। আমরা মানবেতর জীবনের দিকে যাচ্ছি।”

 

অন্যদিকে মোহাম্মদ সোহেল প্রশ্ন তোলেন, “আমাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কেন ব্লক করা হলো? আমরা সাধারণ কর্মী, কোনো অনিয়মের রেকর্ড নেই। এখন খাবার কেনার সামর্থ্যও হারাচ্ছি।”

 

আরেক কর্মকর্তা আশরাফুল হক বলেন, “আট বছর চাকরির পর মূল্যায়ন পরীক্ষা দেওয়া মানে প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়। কোনো কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াই বরখাস্ত করা হয়েছে, যা স্পষ্টভাবে আমাদের অধিকার লঙ্ঘন।”

 

২০১৭ সালের পর ইসলামী ব্যাংকে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তাদের জন্য গত ২৭ সেপ্টেম্বর দক্ষতা মূল্যায়ন পরীক্ষা আয়োজন করা হয়। মূলত এস আলম গ্রুপ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এসব নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রামের পটিয়া ও আশপাশের এলাকা থেকে অনিয়মের মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক নিয়োগ দেওয়া হয়।

 

এই পরীক্ষায় ৫ হাজার ৩৮৫ জন কর্মকর্তার মধ্যে মাত্র ৪১৪ জন অংশ নেন। বাকি ৪ হাজার ৯৭১ জন অংশ না নেওয়ায় পরদিনই তাদের সবাইকে ওএসডি করা হয়। একই সঙ্গে বিভ্রান্তি ছড়ানো ও পরীক্ষার বিরোধিতার অভিযোগে আরও ৪০০ কর্মকর্তাকে দুই ধাপে বরখাস্ত করা হয়।

 

অভিযোগ আছে, ওএসডি হওয়া অনেক কর্মকর্তা সম্প্রতি অফিসে হামলার শিকার হয়েছেন। তাদের দাবি, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পরিকল্পিতভাবে কর্মীদের নিপীড়ন করছে এবং বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

 

অবরোধকারীরা বলছেন, তাদের ছয় দফা দাবি পূরণ না হলে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তাদের অভিযোগ, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যেভাবে পরীক্ষা, ওএসডি ও চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা শুধু অবৈধ নয়—এটি হাজারো পরিবারের জীবন-জীবিকাকে ধ্বংস করছে।

সব খবর

আরও পড়ুন

কারাবন্দী অবস্থায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মুরাদ হোসেনের মৃত্যু

কাশিমপুর কারাগার নিয়ে ফের বিতর্ক কারাবন্দী অবস্থায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মুরাদ হোসেনের মৃত্যু

রাজধানীসহ দুই জেলায় নাশকতার ঘটনা, দেশব্যাপী বাড়ছে জনআতঙ্ক

আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ রাজধানীসহ দুই জেলায় নাশকতার ঘটনা, দেশব্যাপী বাড়ছে জনআতঙ্ক

ময়মনসিংহে গানপাউডার দিয়ে ট্রেনের বগিতে আগুন

নাশকতার চেষ্টা ব্যর্থ ময়মনসিংহে গানপাউডার দিয়ে ট্রেনের বগিতে আগুন

ঢাবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার লাভলু মোল্লাহর বাসায় শিবিরের মব আক্রমণ ও গ্রেপ্তার

শেখ হাসিনার রায় নিয়ে পোস্ট ঢাবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার লাভলু মোল্লাহর বাসায় শিবিরের মব আক্রমণ ও গ্রেপ্তার

প্রতিদিন ১৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্যে চট্টগ্রামের ৫৭ খালের সর্বনাশ

পরিবেশ সংকট প্রতিদিন ১৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্যে চট্টগ্রামের ৫৭ খালের সর্বনাশ

আওয়ামী লীগের ওপর দায় চাপাতে দেশজুড়ে অগ্নিসংযোগ, নাশকতা দুর্বৃত্তদের

সর্বাত্মক শাটডাউন কর্মসূচি আওয়ামী লীগের ওপর দায় চাপাতে দেশজুড়ে অগ্নিসংযোগ, নাশকতা দুর্বৃত্তদের

রাজধানী ঢাকায় একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগ

শহরজুড়ে আতঙ্ক-স্থবিরতা রাজধানী ঢাকায় একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগ

যৌতুকের জন্য বউ পিটিয়ে জেল খাটা কর্মকর্তা এখন বরিশালের ডিসি

যৌতুকের জন্য বউ পিটিয়ে জেল খাটা কর্মকর্তা এখন বরিশালের ডিসি