হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচ। ব্যাটিং ব্যর্থতা, ফিল্ডিং বিপর্যয় মিলিয়ে বাংলাদেশ যেন বারবার একই গল্পই লিখছে। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৫ উইকেটে হারলো লিটন দাসের দল। ফলে ৩-০ ব্যবধানে লজ্জাজনক হোয়াইটওয়াশ। ব্যাট হাতে একার লড়াই চালালেন তানজিদ হাসান তামিম, বল হাতে ভালো শুরু করেছিলেন বোলাররা। কিন্তু একের পর এক ক্যাচ ফেলে ম্যাচ তুলে দিলেন ব্যাটসম্যানদের হাতে।
১৫২ রানের লক্ষ্য নিয়ে বোলাররা শুরুতেই ম্যাচে ফিরিয়ে আনার সুযোগ পেয়েছিলেন। দ্বিতীয় ওভারেই শরিফুল ইসলামের বলে ওপেনার আমির জাঙ্গুর ক্যাচ স্লিপে ছাড়েন সাইফ হাসান। পরের ওভারে মেহেদী হাসান সফলভাবে অ্যালিক অ্যাথানেজকে (১) স্টাম্পিংয়ে ফেরালেও চতুর্থ ওভারে আবারও শরিফুলের বলেই জাঙ্গুর (৯) সহজ ক্যাচ মিস হয়। ষষ্ঠ ওভারে নাসুমের অফ-স্টাম্প উড়িয়ে ব্রেন্ডন কিংকে (৮) ফিরিয়ে দ্বিতীয় সফলতা এনে দেন তিনি। জীবন পাওয়া জাঙ্গু এরপর ২৩ বলে ৩৪ রান করে রিশাদের শিকার হন।
ম্যাচের মাঝপথে আরেক ধাক্কা—গোড়ালির চোটে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান। এরপর ২৭ রানে থাকা আকিম অগাস্টের ক্যাচও ফেলে দেন বদলি ফিল্ডার তানজিম হাসান সাকিব। জীবন পেয়ে অগাস্ট ব্যাটিংয়ে আগ্রাসী হয়ে উঠেন এবং মাত্র ২৪ বলে তুলে নেন ফিফটি। সঙ্গ পান রোস্টন চেজের, তিনিও ২৯ বলে ফিফটি করে ম্যাচ পুরোপুরি ক্যারিবীয় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। রিশাদ এক ওভারেই চেজ ও অগাস্টকে ফিরিয়ে দিলেও ততক্ষণে অনেক দেরি। শেষ পর্যন্ত ১৯ বল হাতে রেখে ১৬.৫ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের হয়ে রিশাদ ৩টি এবং নাসুম ও মেহেদী ১টি করে উইকেট নেন।

এর আগে ব্যাট হাতে তানজিদই ছিলেন পুরো ইনিংসের কেন্দ্রবিন্দু। টসে জিতে চার পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি পারভেজ ইমন (৯) ও লিটন দাস (৬)। তৃতীয় উইকেটে সাইফ হাসানকে (২২ বলে ২৩) সঙ্গে নিয়ে ৬৩ রানের জুটি গড়েন তানজিদ, এই জুটিতেই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে দল। ৩৬ বলে ফিফটি করার পথে তিনি বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম (৪২ ইনিংসে) টি-টোয়েন্টিতে ১ হাজার রান পূর্ণ করেন।
শেষদিকে ব্যাটিং ধসই সংগ্রহ বড় হতে দেয়নি। ১৬তম থেকে ১৯তম ওভারের শেষ বল পর্যন্ত টানা চার ওভারে শেষ বলে একটি করে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সেঞ্চুরির কাছে যাওয়া তানজিদ শেষ ওভারের প্রথম বলে আউট হন ৬২ বলে ৮৯ রান করে (৯ চার ও ৪ ছক্কা)। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫১—যা লড়াই করার মতো মনে হলেও ফিল্ডিং ব্যর্থতায় আর ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে হ্যাটট্রিকসহ ৩ উইকেট নিয়েছেন রোমারিও শেফার্ড। ২টি করে নেন আকিল হোসেন, হোল্ডার ও পিয়েরে।
বাংলাদেশের ব্যাটিং-বোলিং কিছুটা ইতিবাচক হলেও ফিল্ডিং ব্যর্থতা আবারও বড় প্রশ্ন তুলল—কত বড় শিক্ষা লাগবে হারের অভ্যাস ভাঙতে?