ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের ভোলা জেলা সেক্রেটারি ও দারুল হাদিস কামিল মাদ্রাসার মোহাদ্দিস মাওলানা আমিনুল হক নোমানীকে তার ১৭ বছর বয়সী ছেলে খুন করেছে বলে দাবি করেছে জেলা পুলিশ। কড়া শাসনের কারণে ক্ষোভে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার শরীফুল হক।
শুক্রবার রাতে তজুমদ্দিন উপজেলা থেকে ওই কিশোরকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শনিবার বিকেলে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, “নোমানীর ছেলে একাই ‘কিলিং মিশনে’ অংশ নিয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে।”
পুলিশ জানায়, দুই মাস আগে থেকেই হত্যার পরিকল্পনা করছিল কিশোরটি। ইউটিউবে বিভিন্ন ক্রাইম মুভি দেখে সে শিখেছে কীভাবে আঘাত করলে মৃত্যু নিশ্চিত হয়। এরপর ছুরি, টি-শার্ট, ক্যাপ ও হাতঘড়ি সংগ্রহ করে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নেয়। ৬ সেপ্টেম্বর রাতে বাবাকে একা পেয়ে ঘরে ঢুকে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে।
তদন্তের এক পর্যায়ে ১২ সেপ্টেম্বর সন্দেহভাজন হিসেবে নিহতের ছেলেকে ডিবির হেফাজতে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং তার দেখানো স্থানে—বাড়ির পেছনের খাল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার আরও জানান, “বাবার শাসনে ক্ষোভ থেকে একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল সে। ব্যর্থ হওয়ার পর বাবাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।” তবে এই ঘটনায় কিশোর ছেলের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত ছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
নিহত নোমানী ছিলেন ভোলা সদর উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের খতিব এবং স্থানীয়ভাবে পরিচিত ধর্মীয় নেতা। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জানা গেছে, কিশোরটি বাবার সঙ্গে রাগ করে নিজ বাড়িতে না থেকে মামার বাড়িতে থাকত, তবে পড়াশোনা করত বাবার মাদ্রাসাতেই। বর্তমানে মামলাটি ভোলা জেলা গোয়েন্দা শাখার সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল তদন্ত করছে।