নরসিংদীতে পারিবারিক কলহের জেরে ঘুমন্ত স্ত্রী-সন্তানসহ ছয়জনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় দগ্ধ হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ও দুপুরে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রিনা বেগম (৩৮) ও তাঁর ছেলে ফরহাদ (১৫)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সুজন চন্দ্র সরকার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, রিনার শরীরের ৫৮ শতাংশ ও ফরহাদের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। তাঁদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় দগ্ধ রিনার ছোট ছেলে তাওহিদ (৭) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার শরীরের ১৬ শতাংশ দগ্ধ। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ছাড়া পেয়েছেন রিনার বড় ছেলে জিহাদ (২৪), বোন সালমা বেগম (৩৪) ও ভাগনে আরাফাত (১৫)।
ঘটনার অভিযোগে রিনার স্বামী ফরিদ মিয়াকে (৪৪) একমাত্র আসামি করে গত শুক্রবার মামলা করেন রিনার মা হোসনা বেগম। পরদিন রায়পুরা উপজেলার বারৈচা এলাকা থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ফরিদ মিয়া ও রিনা বেগমের দাম্পত্য কলহ চলছিল। এর জেরে তিন সন্তানকে নিয়ে কয়েক মাস আগে বাবার বাড়িতে চলে যান রিনা। গত বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ফরিদ ওই বাড়িতে গিয়ে ঘুমন্ত স্ত্রী-সন্তানসহ ছয়জনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগান এবং দরজায় তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যান।
চিৎকারে প্রতিবেশীরা টিনের দরজা ভেঙে দগ্ধ ব্যক্তিদের উদ্ধার করেন। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে পাঁচজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকায় বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার জানান, এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা দুইজন। প্রাথমিকভাবে মামলা হয়েছিল হত্যাচেষ্টা ও অগ্নিসংযোগের ধারায়। বর্তমানে দুইজনের মৃত্যু হওয়ায় মামলাটি হত্যাকাণ্ড হিসেবে তদন্ত করা হবে।