সর্বশেষ

পাখির খাদ্যের নামে পাকিস্তান থেকে এলো নিষিদ্ধ পপি বীজ

প্রকাশিত: ৭ নভেম্বর ২০২৫, ২২:১৮
পাখির খাদ্যের নামে পাকিস্তান থেকে এলো নিষিদ্ধ পপি বীজ

চট্টগ্রাম বন্দরে পাখির খাদ্যের আড়ালে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হয়েছে নিষিদ্ধ পপি বীজ। চট্টগ্রাম কাস্টমসের তৎপরতায় ধরা পড়েছে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দুইটি কনটেইনারে পাখির খাদ্য হিসেবে ঘোষিত পণ্যের মধ্যে পাওয়া গেছে প্রায় ২৫ টন পপি বীজ, যা বাংলাদেশে আমদানি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

 

চট্টগ্রামের কোরবানিগঞ্জ এলাকার মেসার্স আদিব ট্রেডিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান পাকিস্তান থেকে এই চালানটি আমদানি করে। আমদানি নথিতে উল্লেখ ছিল, কনটেইনার দুটিতে রয়েছে ৩২ টন পাখির খাদ্য। গত ৯ অক্টোবর চালানটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায় এবং পরে তা খালাসের জন্য নেওয়া হয় ছাবের আহম্মেদ টিম্বার কোম্পানি লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি ডিপোতে।

 

তবে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টমস কর্মকর্তারা চালানটির খালাস স্থগিত করে এবং পণ্যের প্রকৃতি যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ২২ অক্টোবর কনটেইনার দুটি খোলা হলে দেখা যায়, সামনের দিকে কিছু পাখির খাদ্যের বস্তা থাকলেও ভেতরে রয়েছে বিপুল পরিমাণ পপি বীজ। সন্দেহজনক এই পণ্যের নমুনা তিনটি পৃথক পরীক্ষাগারে পাঠানো হয় এবং পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যায়, এটি অঙ্কুরোদ্‌গম উপযোগী পপি বীজ।

 

কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, পপি বীজ যদি অঙ্কুরোদ্‌গমে সক্ষম হয়, তবে তা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ অনুযায়ী ‘ক’ শ্রেণির মাদক হিসেবে গণ্য হয়। একইসঙ্গে, আমদানি নীতি আদেশ অনুযায়ী, এই বীজ বাংলাদেশে আমদানি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ফলে এই চালানটি আইন লঙ্ঘন করেছে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

 

চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার এইচ এম কবির জানান, জব্দ করা পপি বীজের বাজারমূল্য প্রায় ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তিনি বলেন, “আমরা গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চালানটি পরীক্ষা করি এবং এতে নিষিদ্ধ পণ্য পাওয়া যায়। এটি একটি সুপরিকল্পিত চেষ্টার অংশ, যেখানে পাখির খাদ্যের আড়ালে নিষিদ্ধ পণ্য আনা হয়েছে।”

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনা শুধু আইন লঙ্ঘনই নয়, বরং দেশের নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্যের জন্যও হুমকি। পপি বীজ থেকে উৎপন্ন হতে পারে আফিম জাতীয় মাদক, যা সমাজে মাদকাসক্তি বাড়াতে পারে। তাই এই ধরনের আমদানির বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

 

এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে, ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম রোধে বন্দরে নিরাপত্তা ও স্ক্যানিং কার্যক্রম আরও জোরদার করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

সব খবর