বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, দেশে এক চেতনার বিদায় ঘটলেও নতুন করে আরেক চেতনার উদ্ভব ঘটছে। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার প্রভাব যেন আবারও নতুনভাবে দেশের ওপর ভর করেছে।”
শনিবার (১৬ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, “আজ আমরা যেখানেই যাই শুনি—একটি নির্দিষ্ট সংগঠনের লোকজন সর্বত্র বসে আছে। সরকারি দফতর থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সবাই বলছে, ওই সংগঠনের সদস্য বা রুকন না হলে চাকরি হবে না। এমনকি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদেরও বলা হয়েছে—রুকন না হলে চাকরি থাকবে না।”
তিনি প্রশ্ন রাখেন, “আহনাফ, মুগ্ধ, আবু সাঈদ, ওয়াসিম—এত তরুণের রক্তপাত কি এ জন্য হয়েছিল যে, প্রশাসন আবার নতুন একটি রাজনৈতিক চেতনার রঙে রঙিন হবে? শেখ হাসিনার অপশাসনের মতো আবারও কি দুঃশাসন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ভর্তি বাণিজ্য ফিরে আসবে?”
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, যারা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দেওয়া হচ্ছে। “তাহলে কি শেখ হাসিনার ভূত নতুন কায়দায় আবারও ফিরে আসছে?”—প্রশ্ন রাখেন তিনি।
রিজভী বলেন, “আমরা সেই গণতন্ত্র চাই, যেখানে ভোটাররা যাকে ইচ্ছা ভোট দেবে এবং সে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসবে। এই গণতন্ত্রের জন্যই আন্দোলন, সংগ্রাম ও ত্যাগ হয়েছে। জুলাই আন্দোলনে শিশু-কিশোররা আবাবিলের ঝাঁকের মতো রাজপথে নেমে এসেছিল, তখনই আমরা মুক্তি পেয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “এখনও তো নির্বাচন হয়নি। কে ক্ষমতায় যাবে সেটা নির্দিষ্ট নয়। অথচ ইতিমধ্যেই সরকারি দফতরের কর্মকর্তারা বলছেন—ওই দলের সদস্য না হলে তারা চাকরিতে থাকতে পারবেন না। জনগণ এক চেতনাধারীকে বিদায় দিয়ে আরেক চেতনাধারীর শাসন চায় না।”
রিজভীর অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও নির্দিষ্ট একটি চেতনার প্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে। তাদের লোক ছাড়া শিক্ষক নিয়োগ বা চাকরি হবে না। “আবার সেই একমাত্রিক দেশ গড়ার প্রচেষ্টা চলছে, গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্রের জন্য খালেদা জিয়া ১৬ বছর লড়াই করেননি, তারেক রহমান দেশকে সংগঠিত করেননি।”
বিএনপির এই নেতা মনে করেন, জনগণের ত্যাগ ও রক্তদান ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্র চলছে। তবে বিএনপি সেই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে।