বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর সাম্প্রতিক এক বক্তব্য ঘিরে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, বিএনপি চাঁদাবাজি আর ঘাট দখলে ব্যস্ত হয়ে মাঠের রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং এ সুযোগে জামায়াত আদালত, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সকল শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্তৃত্ব নিয়েছে।
গত শুক্রবার (১৫ আগস্ট) জেলা শহরের নিজ বাসভবনে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আলতাফ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর থেকে শুরু করে উচ্চ আদালতের বিচারপতি পর্যন্ত অনেকেই জামায়াতের লোক। আর আমরা কী করছি? লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড দখল করছি। আমি জামায়াতের বদনাম করছি না, বরং দু’টি অবস্থানের পার্থক্য তুলে ধরছি।”
তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে দলীয় নেতাদের মধ্যেই বিতর্ক সৃষ্টি হয়। অনেকেই এটিকে ‘আত্মঘাতী’ এবং ‘দলবিরোধী’ মন্তব্য হিসেবে অভিহিত করেছেন।
সভায় আলতাফ আরও বলেন, “নেতা হলে কোয়ালিটি থাকতে হবে। যদি মনে করেন দখলবাজি, চাঁদাবাজিই আপনার কাজ, তাহলে নেতৃত্ব কোথায়?”
এর আগে গত মঙ্গলবার দুমকি উপজেলার আরেক সভায় তিনি বলেন, “পটুয়াখালীতে আওয়ামী লীগ নেই, সব বিএনপি হয়ে গেছে চাঁদা দিয়ে। আগস্ট–পরবর্তী সময়ে যেসব নেতা চাঁদাবাজি, লুটপাটে জড়িত, তাদের নাম-ঠিকানা-ছবি সব আমাদের কাছে আছে। সময়মতো প্রকাশ করা হবে।”
জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী আশফাকুর রহমান বলেন, “লঞ্চঘাট ও বাসটার্মিনাল ইজারা ভিত্তিতে চলে। এই বক্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন।”
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মন্তব্য করতে রাজি না হলেও, জেলা বিএনপির সভাপতি স্নেহাংশু সরকার বলেন, “উনি বুঝে বলেছেন, নাকি না বুঝে বলেছেন তা আমি জানি না। তবে এসব বক্তব্যে তিনি এখন হাসির পাত্র।”
দলীয় নেতাদের অনেকে মনে করছেন, এ ধরনের মন্তব্য বিএনপির চলমান রাজনৈতিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।