সর্বশেষ

বাবা-ছেলের দ্বন্দ্বে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে অচলাবস্থা, ইউজিসির তদন্ত কমিটি গঠন

প্রকাশিত: ৯ অগাস্ট ২০২৫, ১৯:৪৩
ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৈধতা যাচাই না করে যদি ভিসি নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে, তা অবৈধ।”
বাবা-ছেলের দ্বন্দ্বে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে অচলাবস্থা, ইউজিসির তদন্ত কমিটি গঠন

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে (ইইউবি) পরিচালনা নিয়ে তীব্র দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মকবুল আহমেদ খান ও তার ছেলে আহমেদ ফরহাদ খান তানিম। অভিযোগ উঠেছে, জালিয়াতির মাধ্যমে ট্রাস্টি বোর্ড পরিবর্তন করে বিশ্ববিদ্যালয়টির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন ছেলে, যা নিয়ে তদন্তে নেমেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

 

ড. মকবুল অভিযোগ করেছেন, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে একটি ভুয়া বোর্ড সভার তথ্য দেখিয়ে চারজন বৈধ ট্রাস্টি সদস্যকে পদত্যাগকারী হিসেবে দেখানো হয় এবং নতুন দুইজনকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাল রেজুলেশন তৈরি করা হয়। এর ভিত্তিতে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদফতরে ট্রাস্টি বোর্ড পরিবর্তনের অনুমোদন নেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়ায় তাকে ও একজন সিনিয়র ট্রাস্টিকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

 

তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০১০ সালে যৌথ মূলধন কোম্পানির অনুমোদন এবং ২০১২ সালে সরকারি অনুমোদন পায়। দীর্ঘদিন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হওয়ার পর ২০২৪ সালে ছেলে ও তার সহযোগীরা তাকে বহিষ্কারের ষড়যন্ত্র করে। এ বিষয়ে তিনি যৌথ মূলধন কোম্পানি এবং ইউজিসির কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

 

অন্যদিকে, বিতর্কিত ট্রাস্টি বোর্ড খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম মরতুজাকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ২০১০ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে, কারণ আইনে বলা আছে, ভিসি নিয়োগে বোর্ডের সুপারিশ এবং রাষ্ট্রপতির অনুমোদন প্রয়োজন।

 

ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৈধতা যাচাই না করে যদি ভিসি নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে, তা অবৈধ।” তিনি আরও জানান, ট্রাস্টি বোর্ডের বৈধতা নিশ্চিত না করে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না।

 

ইউজিসির সূত্র বলছে, ‘ভারপ্রাপ্ত’ পদে নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ থাকলেও নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। কোনও উন্মুক্ত নোটিফিকেশন ছাড়াই প্রজ্ঞাপন জারি করলে আইনি প্রশ্ন ওঠে।

 

তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলাম তালুকদারকে। অন্য সদস্যরা হলেন ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. সুলতান মাহমুদ এবং সহকারী পরিচালক পারভেজ গাজী।

 

প্রতিষ্ঠাতার আশঙ্কা, অবৈধ ট্রাস্টি বোর্ড অনুমোদন বহাল থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ও প্রতিষ্ঠানের সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি জালিয়াতির তদন্ত করে বোর্ড বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

সব খবর