রাজধানীতে পেঁয়াজ-সবজির বাজারে অস্থিরতা আরও বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম এক লাফে ৪০ টাকা বেড়ে এখন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে বেশির ভাগ শীতকালীন সবজির দামও উচ্চ পর্যায়েই রয়ে গেছে। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
পেঁয়াজের বাজারে নতুন ঝাঁকুনি
বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয় পক্ষই পেঁয়াজের এই হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধিতে বিস্মিত। বাজারে আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের ছোট পেঁয়াজ ১৫০ টাকা এবং বড় পেঁয়াজ ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজও ১৬০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। বিক্রেতারা বলছেন, সিজন শেষে মজুদ কমে যাওয়ায় দাম কিছুটা বাড়া স্বাভাবিক হলেও এক সপ্তাহে ৩০–৪০ টাকা বৃদ্ধি অযৌক্তিক।
বিক্রেতা মো. লিটন বলেন, “দেশি পেঁয়াজের স্টক এখন প্রায় শেষ। তাই দাম বাড়ছে। তবে হুট করে এত বেড়ে যাওয়া ঠিক হয়নি।” তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, দুই-তিন দিনের মধ্যে দাম ১৭০–১৮০ টাকায় পৌঁছাতে পারে।

ক্রেতা মো. আশরাফ আলীর মন্তব্য, “আগেও ৩০০ টাকায় পেঁয়াজ কিনেছি। কিন্তু যে গতিতে দাম বাড়ছে তা খুবই অস্বস্তিকর। সাধারণ মানুষ পুরোপুরি ভুক্তভোগী।”
পেঁয়াজ ছাড়াও রসুন, আদা, আলুসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামও স্থিতিশীল নয়। বগুড়ার আলুর দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা। ভারতীয় আদার দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ টাকা কমলেও অন্যান্য পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সবজির বাজারে স্বস্তি নেই
শীতের সবজি বাজারে এলেও দামে তেমন কোনো স্বস্তি মিলছে না। কয়েকটি সবজির দাম সামান্য কমলেও তা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। ভারতীয় টমেটো ১৫০–১৬০ টাকা, দেশি টমেটো ১২০ টাকা, গাজর ৬০–১২০ টাকা, বেগুন ৭০–৯০ টাকা, শিম ৬০–১৪০ টাকা, পেঁয়াজ পাতা ১০০ টাকা, পেঁয়াজ কলি ১২০–১৬০ টাকা, করলা ৮০–১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে প্রতি লাউ ৮০–১২০ টাকা এবং ফুলকপি-বাঁধাকপি ৪০ টাকা করে পাওয়া যাচ্ছে।

ক্রেতা মো. হারুনর রশীদ বলেন, “বিক্রেতারা কমেছে বললেও বাস্তবে দাম সেই উচ্চ পর্যায়েই আছে।”
মুরগির বাজার কিছুটা সহনীয়
কয়েক সপ্তাহ ধরে মুরগির মাংসের দাম কমতির দিকে। আজ বয়লার মুরগি ১৫৩–১৬৫ টাকা, কক ২৩৭–২৭০ টাকা এবং লেয়ার ২৭৮–৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশি মুরগির দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। গরুর মাংস ৭৮০ টাকা এবং খাসির মাংস ১,২০০ টাকায় অপরিবর্তিত রয়েছে।

মাছ ও মুদি পণ্যের বাজার
ইলিশ ১,১০০–৩,০০০ টাকা, রুই ৪০০–৬০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০–১,৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মুদি পণ্যের দামে তেমন পরিবর্তন না এলেও সয়াবিন তেলের লিটারপ্রতি দাম বেড়েছে ৯ টাকা। পোলাও চাল থেকে ডাল, চিনি থেকে ময়দা এসব পণ্যের দাম আগের অবস্থানেই রয়েছে।
সামগ্রিকভাবে নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা অব্যাহত থাকায় সাধারণ ক্রেতাদের ভোগান্তি আরও বেড়েছে।