দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক গতি আবারও কমেছে। বাংলাদেশ পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স–পিএমআই অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে সামগ্রিক পিএমআই স্কোর দাঁড়িয়েছে ৫৪। যা অক্টোবরের তুলনায় ৭ দশমিক ৮ পয়েন্ট কম। অক্টোবরের স্কোর ছিল ৬২ দশমিক ৮। মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি–এমসিসিআই এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের যৌথ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন বলছে, অর্থনীতির প্রধান চার খাত—কৃষি, উৎপাদন, নির্মাণ ও সেবা—সবখানেই গতি কমেছে।
কৃষি খাতে নভেম্বরের পিএমআই স্কোর দাঁড়িয়েছে ৫৭ দশমিক ৪। যা অক্টোবরের তুলনায় ২ দশমিক ২ পয়েন্ট কম। নতুন ব্যবসা, কর্মসংস্থান এবং ইনপুট খরচ সূচকে ধীরগতির সম্প্রসারণ দেখা গেছে। তবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচক কিছুটা দ্রুত সম্প্রসারণ রেকর্ড করেছে। অর্ডার ব্যাকলগ কমার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।
উৎপাদন খাতে স্কোর আরও বড় পরিমাণে কমেছে। নভেম্বরের স্কোর ৫৮ দশমিক ৩, যা গত মাসের ৬৬ দশমিক ১ থেকে ৭ দশমিক ৮ পয়েন্ট কম। নতুন অর্ডার, রপ্তানি অর্ডার, উৎপাদন, ইনপুট ক্রয়সহ সব সূচকেই সম্প্রসারণ দেখা গেলেও অর্ডার ব্যাকলগ দ্রুত কমেছে।
নির্মাণ খাতেও ধীরগতি স্পষ্ট। নভেম্বরের পিএমআই স্কোর ৫১ দশমিক ২। অক্টোবরের তুলনায় ৫ দশমিক ৩ পয়েন্ট কম। নির্মাণ কার্যক্রম, কর্মসংস্থান ও ইনপুট খরচ সূচকে কিছুটা সম্প্রসারণ থাকলেও নতুন ব্যবসা সূচক আবার সংকোচনে ফিরেছে।
সেবা খাতে এবার সর্বোচ্চ পতন রেকর্ড হয়েছে। নভেম্বরের স্কোর ৫১ দশমিক ৬, যা আগের মাসের ৬১ থেকে ৯ দশমিক ৪ পয়েন্ট কম। কর্মসংস্থান ও ইনপুট খরচ সূচক কিছুটা বেড়েছে। তবে নতুন ব্যবসা, ব্যবসায়িক কার্যক্রম এবং অর্ডার ব্যাকলগ সবই সংকুচিত হয়েছে।
ভবিষ্যৎ ব্যবসা সূচকে কৃষি, নির্মাণ ও সেবায় উন্নতির প্রত্যাশা দেখা গেলেও উৎপাদন খাতে ধীরগতির সম্প্রসারণের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সিইও ড. এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, বৈশ্বিক চাহিদা কমে যাওয়া, রপ্তানি প্রতিযোগিতা হ্রাস, অভ্যন্তরীণ চাহিদার দুর্বলতা এবং নির্বাচন ঘিরে বিনিয়োগ স্থগিত রাখার প্রবণতা—সব মিলিয়ে পিএমআই স্কোরে অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের গতি দুর্বল হয়েছে। বার্ষিক রপ্তানি কমলেও মাসওয়ারি প্রবৃদ্ধি এবং কৃষি ফসল সংগ্রহ অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করেছে বলে জানান তিনি।