পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) অক্টোবর ২০২৫-এর ইকোনমিক আপডেট ও আউটলুকে জানিয়েছে, মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির কারণে বেসরকারি খাতে ঋণ ও বিনিয়োগে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। নির্বাচনের আগে অর্থনীতিতে অস্থিরতা বাড়তে পারে বলেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
জিইডি বলছে, নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় অর্থনৈতিক কার্যক্রম বাড়লেও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বিনিয়োগকারীদের আস্থায় প্রভাব ফেলছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে স্থবিরতা বিরাজ করছে, যা সামগ্রিক অর্থনীতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।
প্রতিবেদনে চারটি দাবী করা হয়েছে:
জিইডি জানিয়েছে, সঞ্চয়পত্রের সুদ কমানো ও ব্যাংক সংস্কারের ফলে আমানতকারীরা ব্যাংকমুখী হচ্ছেন। রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধিও আমানত বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির কারণে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আগস্টে ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে ৬.৩৫ শতাংশে, যা ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সুদে টাকা রাখাকে নিরাপদ মনে করছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো, ফলে বেসরকারি খাতে ঋণ কমছে এবং বাজারে টাকার প্রবাহ হ্রাস পাচ্ছে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস-এর সাবেক মহাপরিচালক ড. এম কে মুজেরী বলেন, নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক মতভেদ ও অনিশ্চয়তা অর্থনীতিতে অস্থিরতা বাড়াতে পারে। নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা ভোটারদের পেছনে বিপুল অর্থ ব্যয় করবেন, যা অনুৎপাদনশীল খাতে প্রবাহিত হয়ে মূল্যস্ফীতি বাড়াতে পারে। এতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, একদিকে ঋণ ও বিনিয়োগে স্থবিরতা, অন্যদিকে নগদ অর্থের অতিরিক্ত প্রবাহ—এই দুইয়ের সম্মিলনে অর্থনীতিতে বড় ধরনের সংকট দেখা দিতে পারে। এজন্য সময়োপযোগী নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।