আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, এলসি ব্যয় ও ডলারের বিনিময় হার বাড়ার প্রভাবে আবারও ভোজ্য তেলের দাম বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। সংস্থাটি লিটারপ্রতি বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৯ টাকা ২৭ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। ফলে বর্তমান সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৮৯ টাকা থেকে তা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১৯৮ টাকা ২৭ পয়সায়।
বিটিটিসি জানিয়েছে, গত ২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত মূল্য সমন্বয় সভায় ৩ আগস্ট থেকে লিটারপ্রতি সয়াবিন তেলের খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১৮৯ টাকা। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা, কাঁচামালের বাড়তি ব্যয় এবং ডলারের দাম বাড়তে থাকায় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানি ব্যয়ে চাপের মুখে পড়ে। নভেম্বরের শুরুতে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন সয়াবিনের দাম দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬২ ডলার এবং পাম তেলের দাম ১ হাজার ৩৭ ডলার। এই অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে দেশে তেলের মূল্য সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে বলে কমিশন উল্লেখ করে।
সুপারিশে প্রতি ডলার ১২২ টাকা ৬০ পয়সা ধরে পরিশোধিত সয়াবিন ও পাম সুপার তেলের নতুন মূল্য নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে বোতলজাত সয়াবিনের মূল্য ১৮৯ টাকা থেকে বেড়ে ১৯৮ টাকা ২৭ পয়সা এবং খোলা সয়াবিনের মূল্য ৮ টাকা ৮৫ পয়সা বাড়িয়ে লিটারপ্রতি ১৭৭ টাকা ৮৫ পয়সা করার কথা বলা হয়েছে।
মূল্যবৃদ্ধির এই সম্ভাবনাময় সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে বছরের শেষ দিকে আবারও ভোজ্য তেলের দাম বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাজারে ইতোমধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের উচ্চমূল্যে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে থাকার প্রেক্ষাপটে নতুন করে তেলের দাম বাড়লে তা আরও চাপ সৃষ্টি করবে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক বছরে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা কমানো না গেলে দেশে ভোজ্য তেলের দাম স্বাভাবিক স্তরে ফিরতে সময় লাগবে।