২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ২০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৩৫ কোটি মার্কিন ডলারে। আগের অর্থবছরে এই পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৮০ কোটি ডলার। এর মধ্যে চীন থেকে বাংলাদেশের আমদানি হয়েছে ১ হাজার ৬৬৪ কোটি ডলার, আর রপ্তানি আয় হয়েছে মাত্র ৭১ কোটি ৫৩ লাখ ডলার।
ঢাকায় চীনা দূতাবাসে অনুষ্ঠিত ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ও চীনা দূতাবাসের যৌথ আলোচনায় এই তথ্য উঠে আসে। ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জানান, অবকাঠামো, জ্বালানি, শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে দুই দেশের মধ্যে বহুমাত্রিক সহযোগিতা রয়েছে।
তাসকীন আহমেদ আরও বলেন, ভবিষ্যতে কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, তথ্যপ্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, অটোমোবাইল, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, পাদুকা, লজিস্টিকস, চিকিৎসা সরঞ্জাম, স্বাস্থ্যসেবা, এপিআই, সেমিকন্ডাক্টর ও জাহাজ নির্মাণ খাতে চীনের বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের দক্ষতা ও প্রযুক্তি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে চীনের সক্রিয় ভূমিকার ওপর জোর দেন।
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানান, গত এক বছরে ২০টিরও বেশি চীনা প্রতিষ্ঠান তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে প্রায় ৮০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় বাড়বে। তিনি বলেন, চীনা উদ্যোক্তারা ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী, তবে উচ্চ শুল্ক ও নীতিগত সহায়তার অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বাংলাদেশের রপ্তানি বহুমুখীকরণের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৮৫ শতাংশ তৈরি পোশাকনির্ভর, যা দীর্ঘমেয়াদে টেকসই নয়। তাই সম্ভাবনাময় নতুন খাতকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী দেশ হিসেবে অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও শিল্প বিনিয়োগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এলডিসি উত্তরণের পর শুল্কমুক্ত সুবিধা সীমিত হয়ে আসবে। তাই বিনিয়োগ, প্রযুক্তি, দক্ষতা উন্নয়ন ও রপ্তানি বৈচিত্র্য বৃদ্ধির পদক্ষেপ এখন সময়োপযোগী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।