দেশের প্রায় ২০ শতাংশ পরিবার বর্তমানে অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)। চিকিৎসা ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতি, ঋণ পরিশোধের চাপ, শিক্ষা খাতে অতিরিক্ত খরচ এবং খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধিকে এ সংকটের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
২০২৪ সালের মে থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে পরিচালিত এ জরিপে দেশের ৮ হাজার ৬৭টি পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সোমবার রাতে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত ‘পরিবার পর্যায়ে মনস্তাত্ত্বিক অবস্থান’ শীর্ষক আলোচনায় জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।
জরিপে দেখা যায়, আর্থিক চাপে থাকা পরিবারগুলোর মধ্যে ৬৭ শতাংশ চিকিৎসা ব্যয় এবং ২৭ শতাংশ ঋণ পরিশোধ নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিপাকে আছেন। এছাড়া ৭ শতাংশ পরিবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং প্রায় ২ থেকে ২.৩ শতাংশ পরিবার পুলিশ ও আদালত সংক্রান্ত জটিলতার মুখে পড়েছে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ। আর্থিক অনিশ্চয়তা ও সামাজিক চাপে প্রায় ৪৬ শতাংশ মানুষ ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাহীন বোধ করছেন। যদিও ঘুষ কিছুটা কমেছে বলে দাবি করা হয়েছে, তবে ৭৪ শতাংশ মানুষের মতে ঘুষ ছাড়া সরকারি কাজে অগ্রগতি হয় না।
পিপিআরসি জানায়, অর্থনৈতিক চাপের পেছনে মূলত তিনটি বিষয় কাজ করছে— দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, আয় কমে যাওয়া এবং পুঁজির ঘাটতি। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ধনীদের ক্ষেত্রেও আয়ের কিছুটা পতন ঘটেছে।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন,
“মূল্যস্ফীতি বা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এখন দেশের সব মানুষের জন্যই প্রধান উদ্বেগের কারণ। অনেক উদ্যোক্তা পুঁজির ঘাটতিতে ভুগছেন, আবার উচ্চবিত্তদের জন্য ঋণ পরিশোধ একটি বড় চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে প্রায় ৪০ শতাংশ দরিদ্র পরিবার।”