আগামী বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষা কবে শুরু হবে, সে সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি। শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, গণভোট এবং রমজান—এই তিনটি বিষয় সময়সূচি নির্ধারণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে এপ্রিল বা মে মাসে পরীক্ষা আয়োজনের সম্ভাবনা থাকলেও তা নিশ্চিত নয়।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। এরপর রমজান। এসএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষা কখন নেওয়া হবে, সেটা পুরোপুরি সরকারের সিদ্ধান্ত।” তিনি জানান, বোর্ডগুলো প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে, যাতে সরকার সিদ্ধান্ত দিলে দ্রুত পরীক্ষা আয়োজন করা যায়।
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক অংশ মিলিয়ে প্রায় ৪০ দিন সময় লাগে। এ কারণে এপ্রিল–মে মাসে পরীক্ষা হলে কালবৈশাখী, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার ঝুঁকিও মাথায় রাখতে হচ্ছে। কর্মকর্তাদের মধ্যে এ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, “এখনও পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা হয়নি। তাই ফেব্রুয়ারিতে না হলে সেটাকে পেছানো বলা যাবে না। এপ্রিলে বা মে মাসে পরীক্ষা হতে পারে—সবকিছুই সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।”
একসময় ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি পরীক্ষা শুরুর রেওয়াজ থাকলেও কোভিড মহামারীর পর শিক্ষাপঞ্জি এলোমেলো হয়ে যায়। ২০২৪ সালে আবার ফেব্রুয়ারিতে পরীক্ষা শুরু হলেও ২০২৫ সালে জুলাই দাঙ্গা-পরবর্তী পরিস্থিতি ও রমজানের কারণে তা এপ্রিলে নিতে হয়।
২০২৬ সালে নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষা হবে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। কারণ তারা নবম শ্রেণিতে বাতিল হওয়া নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা করেছিল। অন্যদিকে অনিয়মিত ও মানোন্নয়ন পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা হবে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ইতোমধ্যে ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত সিলেবাস, প্রশ্নের ধরন ও নম্বর বণ্টন প্রকাশ করেছে।
এদিকে আগামী ৩১ ডিসেম্বর থেকে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হবে। বিলম্ব ফি ছাড়া ফরম পূরণ চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। সর্বোচ্চ ফি বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ২ হাজার ৪৩৫ টাকা এবং ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগের জন্য ২ হাজার ৩১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।