রাজধানীর বকশিবাজারে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২২ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে আল্লামা কাশগরী হলে শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আয়োজিত একটি মিলাদ মাহফিলকে ঘিরে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে অন্তত সাতজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কিছু শিক্ষার্থী অতীতে অন্য রাজনৈতিক দলে যুক্ত থাকলেও বর্তমানে ‘জুলাই আন্দোলনের ট্যাগ’ ব্যবহার করে মাদ্রাসার ভেতরে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। মিলাদ মাহফিলে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে বাগবিতণ্ডা হয়, পরে এক শিক্ষার্থীর ওপর হাত তোলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে রূপ নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহত শিক্ষার্থীদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ মো. ফারুক জানান, আহত সাতজন শিক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে সাদিক (২১), মইন (২২), ইলিয়াস (২১), ওমর ফারুক (২১), আবু বক্কর (২২), ওয়ালিদ (২২) ও এনামুল (২২) রয়েছেন।
রাত ১১টার দিকে দেখা যায়, শতাধিক শিক্ষার্থী মাদ্রাসার বাইরে অবস্থান করছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা মাদ্রাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন, আর শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ভেতরে অবস্থান করছে। এ সময় দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিলও হয়েছে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, মাদ্রাসার সামনের দোকানপাট থেকে চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে জটিলতা চলছে। প্রায় ২০টি দোকান মাদ্রাসার জমিতে থাকলেও বাইরের দলীয় লোকেরা ভাড়া সংগ্রহ করে। সিটি করপোরেশন ১,৫০০ টাকা নিলেও প্রতিটি দোকানকে ১৫-১৬ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়। এ বিষয়েও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
চকবাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল খায়ের বলেন, মিলাদ মাহফিল চলাকালে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
এদিকে একই রাতে রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজেও ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। নতুন শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে ব্যানার টানানোকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ কয়েকজন আহত হন এবং তাদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সব মিলিয়ে, আলিয়া মাদ্রাসা ও তিতুমীর কলেজে সংঘর্ষের ঘটনা শিক্ষাঙ্গনে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতার নতুন দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।