দেশে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৭ হাজার ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৫৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যদিও এ সময়ের মধ্যে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ২৭,১১৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১০৫ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, আগস্ট মাসে এখন পর্যন্ত ৬,১৩৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন এবং মৃত্যুর সংখ্যা ২২ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১,২৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী। এর মধ্যে ঢাকায় ৪৫৩ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগে ৮৩৬ জন চিকিৎসাধীন।
মাসভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারিতে ১,১৬১ জন রোগী ভর্তি হন এবং মৃত্যু হয় ১০ জনের। ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন আক্রান্ত হন, মৃত্যু ৩ জন। মার্চে ৩৩৬ জন ভর্তি, তবে কোনো মৃত্যুর তথ্য নেই। এপ্রিল মাসে ৭০১ জন আক্রান্ত হন, মৃত্যু ৭ জন। মে মাসে ১,৭৭৩ জন ভর্তি হন, মৃত্যু ৩ জন। জুনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫,৯৫১ জনে, মৃত্যু হয় ১৯ জনের। জুলাই মাসে সর্বোচ্চ ১০,৬৮৪ জন রোগী ভর্তি হন এবং মৃত্যু হয় ৪১ জনের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে এবং আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে সংক্রমণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। তাই এই সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যে নাগরিকদের সচেতন করতে বিভিন্ন প্রচারণা চালাচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে—জমে থাকা পানি পরিষ্কার রাখা, ঘরের আশপাশে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা এবং জ্বর হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।
এদিকে, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনগুলো মশা নিধন কার্যক্রম জোরদার করেছে। তবে জনসচেতনতা ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে নাগরিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।