২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের অব্যবহিত পরে, সেদিন বিকালে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতির উদ্দেশ্যে একটি ভাষণ প্রদান করেন।
সেই ভাষণে জনগণের উদ্দেশে সেনাপ্রধান বলেন, "দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখেন। আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখেন, একসঙ্গে কাজ করি। দয়া করে সাহায্য করেন। মারামারি সংঘাত করে আর কিছু পাবো না। সংঘাত থেকে বিরত হোন। সবাই মিলে সুন্দর দেশ গড়ি।"
সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ করে সুন্দর আলোচনা করেছি। সেই আলোচনার প্রেক্ষিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীন দেশের সব কার্যক্রম চলবে।"
তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্ববান জানিয়ে বলেছিলেন, "দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখেন। আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখেন, একসাথে কাজ করি। দয়া করে সাহায্য করেন। মারামারি সংঘাত করে আর কিছু পাব না। সংঘাত থেকে বিরত হোন। সবাই মিলে সুন্দর দেশ গড়েছি। আমরা এখন বঙ্গবভনে যাব। সেখানে অন্তবর্তী সরকার গঠনের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
সমস্ত হত্যা ও অন্যায়ের বিচার হবে উল্লেখ করে ওয়াকার-উজ-জামান বলেছিলেন, "আপনারা সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আস্থা রাখেন। আমরা সমস্ত দায়দায়িত্ব নিচ্ছি। আপনাদের কথা দিচ্ছি, আশাহত হবেন না। যত দাবি আছে, সেগুলো আমরা পূরণ করব। দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে নিয়ে আসব। আমাদের সহযোগিতা করেন। প্রতিটি হত্যার বিচার হবে।"
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কত সদস্য হবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে সেসময় সেনাপ্রধান প্রত্যুত্তর দিয়েছিলেন, "এখনো খুব আর্লি স্টেজ। আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যাব। আলাপ–আলোচনা করে ঠিক করা হবে। আজকেই (৫ আগস্ট, ২০২৪) রাষ্ট্রপতির কাছে যাব। রাতের মধ্যেই সমাধানে যাওয়ার চেষ্টা করব। দু–এক দিন আমাদের সময় দেওয়া লাগতে পারে।"
সেনাবাহিনী শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার কাজ চালিয়ে যাবে উল্লেখ করে সেনাপ্রধান সেসময় বলেন, "সবার দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে সাহায্য করা। পরিস্থিতি শান্ত হলে কারফিউ বা জরুরি অবস্থার প্রয়োজন নেই। আমি আদেশ দিয়েছি, কোনো গোলাগুলি হবে না। সেনাবাহিনী, পুলিশ কোনো গুলি চালাবে না। আশা করছি, এই বক্তব্যের পর পরিস্থিতির উন্নতি হবে।"