২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের সময় আন্দোলনকারীদের চাপে পুলিশ বাহিনী পিছু হটলে সারা দেশে থানা ও ফাঁড়িগুলো পুলিশশূন্য হয়ে পড়ে। সেই সুযোগে দুষ্কৃতকারীরা প্রায় ৫ হাজার ৭৫৩টি অস্ত্র ও ৬ লাখ ৫১ হাজার রাউন্ড গোলাবারুদ লুট করে। নতুন সরকার গঠনের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে ৪ হাজারের বেশি অস্ত্র উদ্ধার করলেও এখনও প্রায় দেড় হাজার আগ্নেয়াস্ত্র নিখোঁজ।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এসব অস্ত্র নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধীদের হাতে গিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ অস্থিতিশীল করতে পারে। অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে অস্ত্র উদ্ধার এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
পুলিশ সদর দফতর জানিয়েছে, অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সেনাবাহিনীও জানিয়েছে, তারা ৮০ শতাংশ অস্ত্র উদ্ধার করেছে এবং বাকি ২০ শতাংশ নির্বাচনের আগেই জব্দ করা হবে। গত ৯ আগস্ট সেনাবাহিনী রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১,১০০টি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে এবং ৯ জনকে গ্রেফতার করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, তাদের স্থাপনা থেকে লুট হওয়া প্রায় ১,৯০০ অস্ত্রের মধ্যে ১,২০০’র বেশি উদ্ধার হয়েছে। ডিএমপি নির্বাচনের আগে সব অস্ত্র উদ্ধারের আশাবাদী। পুলিশের গণমাধ্যম শাখার উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা কাজ করছি।”
পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন জানান, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। অপরাধপ্রবণ এলাকায় বিশেষ টহল ও চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, “অস্ত্র যারা নিয়েছে তারা পরিকল্পিতভাবে নিয়েছে। পুরস্কার ঘোষণায় অপরাধীরা সাড়া দেবে না। সেনাবাহিনীসহ সব ইউনিটকে সমন্বিতভাবে অভিযান চালাতে হবে।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, “আমরা অস্ত্র উদ্ধারে কাজ করছি। সাত শো’র বেশি অস্ত্র এখনও উদ্ধার হয়নি, তবে সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি।”
নির্বাচনের আগে অস্ত্র উদ্ধারে সফলতা না এলে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়বে এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা কঠিন হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।