রাজধানীর গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্যের বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার নাম উঠে আসায় দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “মাঝে মাঝে রাতে আমার কাজ শেষ হতে ভোর হয়ে যায়। সে সময় বাসায় খাওয়া-দাওয়া দেওয়ার মতো কেউ না থাকায় আমি বেশির ভাগ সময় ৩০০ ফুটের নীলা মার্কেটে যাই হাঁসের মাংস খেতে। আর বেশি ভোর হয়ে গেলে নীলা মার্কেট বন্ধ হয়ে যায়, তখন আমি যাই গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে।”
এই বক্তব্যের সূত্র ধরে প্রশ্ন ওঠে, ঠিক কোন সময় তিনি গুলশানে ছিলেন এবং তা কি চাঁদাবাজির ঘটনার সময়ের সঙ্গে মিলে যায়? গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বহিষ্কৃত নেতা জানে আলম অপু তার ৩৫ মিনিটের ভিডিও বার্তায় দাবি করেছেন, চাঁদাবাজির দিন ভোর ৪টা ১০ থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যে গুলশান-২ মোড়ে ওয়েস্টিন হোটেলের নিচে সাদা সিএফ বাইকে হেলমেট পরা অবস্থায় তার সঙ্গে কথা বলেন একজন উপদেষ্টা—যিনি ছিলেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
অপু বলেন, “একজন উপদেষ্টা রাত ৪টার সময় বাইকে চড়ে হেলমেটে মুখ ঢেকে গুলশানের মতো এলাকায় কী কাজে আসে সেটা আমার জানার কথা না।” তিনি আরও দাবি করেন, অভিযানের আগে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে তারা সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় যান, কিন্তু অভিযানের সময় শাম্মীকে পাওয়া যায়নি। অপু প্রশ্ন তোলেন, “কেন আগের রাতের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা হলো না?”
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ অবশ্য চাঁদাবাজির সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে বলেন, “আমার মনে হয় না, এখনো কেউ এ রকম কোনো প্রমাণ দিতে পেরেছে আমার সম্পৃক্ততা আছে। বরং আরও যার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, তা একজন রাজনৈতিক নেতার বাসায় জোরপূর্বক নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে।”
সিসিটিভি ফুটেজে হেলমেট পরা ব্যক্তিকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ফুটেজে হেলমেট পরা যে কাউকে যদি আমাকে বলে দাবি করা হয়, এটা কতটুকু আসলে বিশ্বাসযোগ্য?”
এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন, “এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চরিত্রহননের চেষ্টা।” আবার কেউ কেউ দাবি করছেন, “সত্য উদঘাটনে নিরপেক্ষ তদন্ত জরুরি।”
ভিডিও বার্তার সূত্র ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম হয়েছে। সাধারণ নাগরিকদের প্রশ্ন—একজন উপদেষ্টা ভোররাতে অভিজাত হোটেলে কেন যান, আর সেই সময়ই কেন চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে?