২২ বছর পর আবারও সেই স্বপ্নপূরণের মুহূর্ত। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডের ফিরতি লেগে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। জাতীয় স্টেডিয়ামে মঙ্গলবারের ম্যাচে দ্বাদশ মিনিটে শেখ মোরসালিনের করা গোলটিই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে।
ম্যাচের শুরুটা ছিল সতর্কতার। গ্যালারিভরা দর্শকের তুমুল উচ্ছ্বাসে বাংলাদেশ আক্রমণে গেলেও মাঝমাঠ দখলে শুরুতে এগিয়ে যেতে পারেনি। তৃতীয় মিনিটে রাকিব হোসেনের দুর্বল ভলি সহজে ধরেন ভারতের গোলকিপার গুরপ্রিত সিং সান্ধু। এরপরও বাংলাদেশ ধীরে ধীরে ছন্দ খুঁজে পেতে থাকে।
দ্বাদশ মিনিটে আসে সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত। মাঝমাঠ থেকে রাকিবকে বল বাড়িয়ে বক্সের দিকে ছুটে যান মোরসালিন। রাকিবের ফিরতি পাস পেয়ে গোলকিপারের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে নিখুঁত টোকায় জালে বল পাঠান তিনি। চোট কাটিয়ে ফেরা এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের জাতীয় দলের জার্সিতে এটি ছিল তার সপ্তম গোল।
এরপর শুরু হয় গোল রক্ষার লড়াই। ভারতের আক্রমণ বারবার প্রতিহত করেন ইংল্যান্ড প্রবাসী ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হামজা ও ডিফেন্ডাররা। ৩১তম মিনিটে বড় বিপদ থেকে দলকে রক্ষা করেন হামজা—চাংতের শট গোলের মুখে ক্লিয়ার করে স্বস্তি এনে দেন লাল-সবুজ শিবিরে।
বাংলাদেশও সুযোগ পেয়েছিল ব্যবধান বাড়ানোর। প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে হামজার বাম পায়ের ভলি অল্পের জন্য বাইরে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে ভারত চাপ বাড়ালেও বাংলাদেশের রক্ষণ ছিল সুশৃঙ্খল। বদলি খেলোয়াড় মহেশ সিং, সানান ও চাংতে গোলের সুযোগ তৈরি করলেও শেষ মুহূর্তে প্রতিবারই বাংলাদেশের রক্ষণ প্রাচীর ভেঙে উঠতে পারেনি।
৮১তম মিনিটে ফাহিমের হেডে বল ঝিঙ্গানের গায়ে লাগে—বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা পেনাল্টির দাবি করলেও রেফারি সাড়া দেননি। যোগ করা সময়ে ভারতের প্রবল চাপ সামলে শেষ পর্যন্ত জয় ধরে রাখে বাংলাদেশ। শেষ বাঁশির আগ মুহূর্তে ফাহিমের শট প্রতিহত করেন ভারতীয় ডিফেন্ডার, তবে তা হতাশা ছড়ানোর বদলে জয় সুরক্ষার হাসিই বাড়ায় গ্যালারিতে।
এই জয়ে পাঁচ ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে ‘সি’ গ্রুপের তৃতীয় স্থানে উঠেছে বাংলাদেশ। ২ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে ভারত। ২০০৩ সালের পর আবার ভারতবধ—আর তাই মোরসালিনের গোল শুধু জয়ই নয়, ফুটবল সমর্থকদের জন্য ইতিহাস পুনর্জাগরণের আবেগও বয়ে আনে।