ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ময়মনসিংহের কবি ও সংস্কৃতিকর্মী শামীম আশরাফকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (৬ অক্টোবর) রাত পৌনে ১০টার দিকে নগরীর আমলাপাড়া এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
পুলিশের দাবি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্ম অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দক্ষিণ বিভাগের ওসি মুহিদুল ইসলাম বলেন, “ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠার পরই তাকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে তার মালিকানাধীন ছাপাখানা ‘গ্রাফিটি’তেও অভিযান চালানো হয়।”
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ১১টার দিকে ‘শামীম আশরাফ’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্টে লেখা হয়—
“আমার স্ট্যাটাসের ভাষাগত বৈচিত্র্য ইচ্ছে করেই আনছি। আর দুয়েকদিন গালিময় স্ট্যাটাস দেখা যাবে। মাত্র দুয়েকদিন ধৈর্য ধরুন, প্লিজ। এরপর ভালো হয়ে যামু।”
এর দুই ঘণ্টা পর একই আইডি থেকে আরেকটি পোস্টে এক মন্তব্যের জবাবে ধর্ম অবমাননাকর কথা বলা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। পোস্টটি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করে।
বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ার পর সন্ধ্যার দিকে সেই ফেসবুক আইডি থেকে আরেকটি পোস্টে শামীম আশরাফ লেখেন, “আমার যে কমেন্টটি মানুষকে ব্যথা দিয়েছে, সেজন্য ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।” তবে এর কিছুক্ষণ পরই তাকে পুলিশ আটক করে।
শামীম আশরাফের আটককে কেন্দ্র করে স্থানীয় সাংস্কৃতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বিষয়টি আইনগত প্রক্রিয়ায় যাচাইয়ের আহ্বান জানালেও অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শিল্পী-সাংস্কৃতিককর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে আটক বা মামলার ঘটনা বেড়েছে। তাদের মতে, এমন ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও মানবাধিকার সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, “তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক অনুসন্ধান চলছে। প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাইয়ের পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”