“ঐকমত্য কমিশনের গ্রুপ ছবিতে নারী খুঁজে পাওয়া যায় না, এটা খুবই লজ্জাজনক”—রাজনীতিতে নারীর অনুপস্থিতি নিয়ে এমন মন্তব্য উঠে এসেছে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে। ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীরা কোথায়?’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নারী নেত্রী, অধিকারকর্মী ও সংস্কৃতিকর্মীরা অংশ নেন।
আয়োজক ‘নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরাম’ জানায়, দেশের ৫১ শতাংশ নারীর অন্তর্ভুক্তি ছাড়া গণতন্ত্র পূর্ণতা পায় না। তাই সংসদে ৫০ শতাংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা সংবিধানের সমতার নীতির বাস্তবায়ন।
সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, “টেলিভিশনে ঐকমত্য কমিশনের ছবি দেখে লজ্জা লাগে—সেখানে নারী নেই।” তিনি বিশ্বজুড়ে নারীর নেতৃত্বের উদাহরণ তুলে ধরেন, “গ্রেটা থুনবার্গ মাঝসমুদ্রেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন, আমাদের নারীদেরও থামানো যাবে না।”
নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন মুরশীদ বলেন, “শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে মেয়েরা এগিয়ে গেছে, কিন্তু রাজনীতিতে কেন পিছিয়ে?” আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, “নারীর অংশগ্রহণের পাশাপাশি সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।”
বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদ বলেন, “কেন্দ্র থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে আমি, তবে এখনই সংরক্ষিত আসন বাদ দেওয়ার পক্ষে নই।”
জামায়াতে ইসলামীর অধ্যাপক হাবিবা আখতার বলেন, “নারী প্রধানমন্ত্রী থাকার পরও অধিকার পাইনি। এখন অধিকার আদায় করব।” তিনি জানান, জামায়াতে ৪৩% নারী সদস্য রয়েছেন।
সাবেক সংসদ সদস্য নিলুফার চৌধুরী মনি বলেন, “সংরক্ষিত আসনে এমপি হয়ে আমরা দ্বিতীয় শ্রেণির ছিলাম। পুরুষরা ৮ মিনিট কথা বললে আমরা পেতাম ৪ মিনিট।”
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান জোনায়েদ সাকি বলেন, “নারীর জন্য রাজনৈতিক পরিবেশ এখনও প্রতিকূল। বুলিং, বাধা, অবমূল্যায়ন—সবই আছে।” জুলাই আন্দোলনের উমামা ফাতেমা বলেন, “নারীদের সিদ্ধান্তগ্রহণে আসতে না দেওয়ার জন্য সুচারু কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির সামান্তা শারমিন বলেন, “রাজনীতি এখনো পেশিশক্তিনির্ভর। এই কাঠামো না বদলালে নারীরা টিকবে না।”
সম্মেলনে কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়:
এই সম্মেলন নারীর রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।