সর্বশেষ

আইএমএফ-এর ঋণ নিশ্চিত করতে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স বিক্রির পথে

প্রকাশিত: ৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:০৫
আইএমএফ-এর ঋণ নিশ্চিত করতে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স বিক্রির পথে

পাকিস্তান আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (আইএমএফ)-এর কাছ থেকে নতুন ঋণ পেতে সরকারি বিমানসংস্থা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ) বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দীর্ঘদিন লোকসানে চলা এই সংস্থাকে বেসরকারিকরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক চাপ কমাতে চাইছে ইসলামাবাদ। তবে এ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে যে, ঘুরপথে সংস্থাটির মালিকানা পাক সেনার হাতে চলে যেতে পারে।

 

সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আগামী ২৩ ডিসেম্বর পিআইএ-কে নিলামে তোলা হবে এবং টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে নেওয়া এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আইএমএফ-এর শর্ত পূরণ করে নতুন অর্থনৈতিক প্যাকেজ নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। গত মাসে পাকিস্তানের বেসরকারিকরণ মন্ত্রী মহম্মদ আলি জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন সরকারি সংস্থা বিক্রি করে প্রায় ৯৬ কোটি টাকা (ভারতীয় মুদ্রায়) সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে সরকার পিআইএ-র ১৫ শতাংশ অংশীদারি নিজেদের হাতে রেখে বাকি অংশ বেসরকারি খাতে তুলে দিতে চায়।

 

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও টিভি ও ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএমএফ-এর শর্ত অনুযায়ী পিআইএ-র ৫১ থেকে ১০০ শতাংশ বিক্রি করে দেওয়া হতে পারে। এতে সংস্থার নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি বেসরকারি হাতে চলে যাবে।  

 

নিলামে অংশ নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে চারটি সংস্থা। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হলো ফৌজি ফাউন্ডেশন, যা পাক সেনার নিয়ন্ত্রণাধীন। প্রতিষ্ঠানটি সার, সিমেন্ট, বিদ্যুৎসহ একাধিক শিল্পে সক্রিয় এবং এবার বিমান পরিষেবায় প্রবেশের আগ্রহ দেখাচ্ছে। সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের ক্ষমতা সামরিক ও রাজনৈতিক উভয় ক্ষেত্রে ক্রমশ বাড়ছে। ফলে পিআইএ-র মালিকানা সেনার হাতে গেলে বেসামরিক ক্ষেত্রেও তাদের প্রভাব আরও বিস্তৃত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  

 

ফৌজি ফাউন্ডেশন ছাড়াও নিলামে অংশ নিতে পারে লাকি সিমেন্ট কনসর্টিয়াম, আরিফ হাবিব কর্পোরেশন কনসর্টিয়াম এবং এয়ার ব্লু লিমিটেড। এরা সবাই পাকিস্তানের বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, যারা বিমান খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী।  

 

পিআইএ দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে চলছে। আন্তর্জাতিক রুটে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়া, দুর্বল ব্যবস্থাপনা এবং ঋণের চাপ সংস্থাটিকে প্রায় অচল করে দিয়েছে। আইএমএফ-এর শর্ত অনুযায়ী লোকসানি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেসরকারিকরণ করতে হবে। তাই পিআইএ বিক্রি করা ছাড়া সরকারের সামনে তেমন বিকল্প নেই।  

বিশ্লেষকেরা বলছেন, পিআইএ বিক্রি হলে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে কিছুটা স্বস্তি আসতে পারে। তবে যদি সেনা-নিয়ন্ত্রিত ফৌজি ফাউন্ডেশন মালিকানা নেয়, তাহলে বেসামরিক খাতে সেনার প্রভাব আরও বাড়বে। এতে রাজনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।  

 

সব মিলিয়ে, পাকিস্তান আইএমএফ-এর ঋণ নিশ্চিত করতে পিআইএ বিক্রির পথে হাঁটছে। নিলামে কারা অংশ নেয় এবং শেষ পর্যন্ত মালিকানা কার হাতে যায়, তা নিয়েই এখন সবার নজর।

সব খবর

আরও পড়ুন

মিয়ানমারে জান্তা সরকারের নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা

ভোট বর্জনের আভাস মিয়ানমারে জান্তা সরকারের নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা

ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় জাপানের বিগ-বি প্রকল্প ঝুঁকির মুখে

ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় জাপানের বিগ-বি প্রকল্প ঝুঁকির মুখে

মালয়েশিয়ায় সাঁড়াশি অভিযানে ৭২ বাংলাদেশিসহ ৪০২ অভিবাসী আটক

মালয়েশিয়ায় সাঁড়াশি অভিযানে ৭২ বাংলাদেশিসহ ৪০২ অভিবাসী আটক

সৌদিতে অনুমতি ছাড়া নির্বাচনি সভা, কয়েকজন বাংলাদেশি আটক

সৌদিতে অনুমতি ছাড়া নির্বাচনি সভা, কয়েকজন বাংলাদেশি আটক

যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় নতুন তালিকা

১৯ থেকে বেড়ে ৩৯ দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় নতুন তালিকা

ভিক্ষাবৃত্তির দায়ে গত ১১ মাসে বিদেশ থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে ৫১ হাজারের বেশি পাকিস্তানিকে

পাকিস্তানি ফেডারেল এজেন্সির তথ্য ভিক্ষাবৃত্তির দায়ে গত ১১ মাসে বিদেশ থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে ৫১ হাজারের বেশি পাকিস্তানিকে

আইইএলটিএস পরীক্ষায় বড় ত্রুটি শনাক্ত

বাংলাদেশেও প্রশ্নফাঁস আইইএলটিএস পরীক্ষায় বড় ত্রুটি শনাক্ত

বেথলেহেমে দুই বছর পর জ্বলে উঠল বড়দিনের আলো

আশা, শোক ও সংকটের মাঝেই উৎসব বেথলেহেমে দুই বছর পর জ্বলে উঠল বড়দিনের আলো